ধারাবাহিক – প্রতি শনিবার প্রকাশিত হয় ।
৬ষ্ঠ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
৭ম পর্ব শুরু ………
আদরে সোহাগে ঘুঘু (Spotted dove)
“তুমি
নিশ্চিন্তে, নির্দ্বিধায় আমার বুকে মাথা রাখতে পার,কোনও
চিন্তা নেই গো! আমি শুধু তোমারই”….. ।
বেশ গাড় প্রেমে মাখো মাখো এমন একটা
নাম দিয়ে লেখার শুরুটা করলাম। তারপর বেশ মিষ্টি মিষ্টি কথা দিয়ে প্রেমালাপ শুরু
করলাম বলে কেউ যেন থতমত খেয়ে যাবেন না। ভালো করে নিরীক্ষণ করলে এমন অনেক অনন্য,অসাধারণ
দৃশ্য চাক্ষুষ হতে পারে। এই যেমন ঘুঘু পাখির নিভৃত ভালোবাসার দৃশ্য! দেখেছেন
কখনও!...... নাঃ….দেখেন নি
পাখিদের এমন করে আবেগ-ঘন হয়ে ভালোবাসার পরশ মাখতে। আহা:,জাস্ট ভাবা যায় না!
নিশ্চয়ই এতক্ষণে সবাই ভাবছেন কি ব্যাপার রে
বাবা! লিখছে পাখির কথা, দিচ্ছে তাদের ছবি আর বলছে অন্য
কথা! এ যেন সস্তা সিনেমার ডায়লগের মতো শোনাচ্ছে নাঃ!
আরে:! না না,এভাবে
আমায় ভুল বুঝলে চলবে না। তাহলে,নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বাড়বে।
আসল ব্যাপারটা হল....আমি যা দেখি, যেমন করে দেখি। তেমন করেই কথাগুলো
সাজিয়ে নিয়ে লিখি।
সত্যি কথা বলতে লেখার শুরু করেছি যে কথাগুলো দিয়ে, তার কোনটাই আমার বলা কথা নয়। এগুলো যাদের ছবি তারাই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিল। গাছের আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে ভালোবাসা-বাসি করার সময় সুখ স্বপ্নে বিভোর হয়ে গিয়েছিল ওরা। গভীর ভালোবাসায় চোখদুটো ঝলমলিয়ে উঠেছিল দুজনের। এতক্ষণ যাদের কথা বললাম,তারা হল দুটো ঘুঘু পাখি,বুঝতে অসুবিধা নেই যে তার একটি স্ত্রী- এবং অন্যটি পুরুষ।
আমিই আড়াল থেকে ওদের সব কথাগুলো
শুনে ফেলেছি। তবে এতে কিন্তু আমার কোনও দোষ নেই। আমার রান্নাঘর থেকে যে উঠোনের
জবাগাছটা সম্পূর্ণ দেখা যায়! তাই তো চোখ পড়ে গেলো।
তা যে কথা বলছিলাম। ওরা তো আমাদের মতো করে বলতে
পারে না! পাখি,তাই পাখির মতো করেই বলে! আমি সবসময় ধারে কাছে থাকি,তাই ওদের
ভাব-ভঙ্গিমা দেখলে কিছুটা বুঝতে পারি,যে ওরা কি বলতে চাইছে!
তবে শুধু আমি নয়, অনেকেই
ওদের ছবিটা দেখে বুঝে নেবে যে, এই মুহূর্তে একজন আরেকজনকে কিই বা
বলতে পারে। তোমাদের তো হয়েছে, তোমরা জানো যে ভালোবাসার ভরসা কেমন
করে দিতে হয়। হা: হা: হা:..
ঘুঘু পাখি দুটো আমার বাড়ির চারপাশেই ঘোরাঘুরি
করে। এখানেই থাকে এখানেই খায়। ওরা আমার ঘরোয়া পাখি দলের সদস্য। একদিন সকালবেলা, তখন ঘড়িতে বেলা 9টা- সাড়ে 9টা হবে।
আমি রান্নাঘরে প্রাতরাশ তৈরির ব্যবস্থা
করতে ব্যস্ত,হঠাৎই চোখ গেলো জবা গাছটার দিকে। শাখা-প্রশাখা মেলে গোল ছাতার মতো বেড়ে উঠেছে গাছটা। যেখান
থেকে গাছের কাণ্ডগুলো বহুধা বিভক্ত হয়েছে
সেই জায়গাটা গাছের ডালপালা পাতা দিয়ে
বেশ ঘেরা। কিছুটা আড়াল মতো। সেই আড়ালে বসে দুটো ঘুঘু পাখি। একজন অন্যজনের
বুকে মাথা ঠেকিয়ে রেখেছে। আমি রান্নাঘর থেকে ওদের দেখতে পাচ্ছি কিন্তু ওরা আমাকে
দেখেনি। তখনকার মতো পড়ে রইলো আমার সব কাজ কর্ম।
রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে ঘরে গিয়ে আলমারি খুলে ক্যামেরা বার করে নিয়ে এসে আড়াল
থেকে ওদের ছবি তুলছি। চোখের সামনে দেখছি
ভালোবাসায় জ্বল জ্বল করছে চারটে চোখ। সেটা যেন ছিল স্বর্গীয় দৃশ্য। উঠোনে
নেমে ক্রমশ: ওদের দিকে এগিয়ে চলেছি আমি। তাতে ওদের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। এমনি আবেশে
অবেগঘন হয়ে বসেছিল ওরা।
ঠিক দুদিন আগে খুব বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টিতে
আমার বাগানে জল জমে,আর পাখিরা মহানন্দে স্নান করে। একবার করে জলের মধ্যে
মাথা ডুবিয়ে দেয়,তারপর মাথা নাড়িয়ে ডানা ঝাপটিয়ে সারা শরীরের জল ঝরায়।
সেই জল অনেক দূর অবধি ছিটিয়ে যায়। সেদিন সকালবেলা দুজনকে এমনভাবে নিমগ্ন হয়ে বসে
থাকতে দেখে কেন জানিনা মনে হয়েছিল,সারাদিনে এমন অনেক দৃশ্যই আমি
চোখের সামনে দেখতে পাবো।
বৃষ্টি হলেই আমার বাড়ির উঠোন সংলগ্ন ছোট নালিতেও
জল ছাপিয়ে ওঠে। বেলা বাড়তেই দেখি,আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে দুই
ঘুঘু পাখির প্রেমিক হৃদয়! আদর-সোহাগ সব সেরে জলেই নেমে পড়লো দুজনে। একজন জলে নেমে
ডানা ঝাপটিয়ে তার প্রকাশ ঘটালো,সেই ভেজা ডানার জল ছিটিয়ে গেলো
অনেক দূর........ অন্যজন চুপ করে বসে শুধু উপভোগ করলো। আবার খানিক বাদে দুজনেই
ডানা ঝাপটিয়ে খোশ মেজাজে মেতে উঠলো।
পাখিরা সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায় আর রাতে
আশ্রয় নেয় গাছের ডালে। বেশিরভাগ পাখি বাসা তৈরি করে,ডিম পাড়ার
জন্যে। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরিয়ে আসার পর,তারা একটু বড়ো হয়ে গেলে বাসার
প্রয়োজনও ফুরিয়ে যায়।
সেবার সুপার সাইক্লোন আমফান (20thMay,2020) ঝড়ের সময় একটা দৃশ্য দেখে শত
কষ্টের মধ্যেও খুব আনন্দ পেয়েছিলাম। ভয়ঙ্কর সেই ঝড়ে আমার বাগানের চারপাশের অনেক
গাছ ভেঙে পড়েছিল। বিশেষ করে ছাতার মতো ডালপালা ছড়ানো অশ্বত্থ গাছের মাথার উপর দিক
থেকে উপড়ে গিয়েছিল। আমের ডাল ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। সারারাত ভয়ঙ্কর প্রলয়
ঝড়-বৃষ্টির পর প্রকৃতি যেন হঠাৎই ভীষণরকম স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভোরের পাখিদের কোনও
সাড়া নেই,হঠাৎই যেন তারা ডাকতে ভুলে গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে ডানা
ভেঙে মাটিতে পড়ে গিয়েছে অনেক পাখি ও তার ছানারা। তার উপর আছড়ে পড়ে রয়েছে ভাঙা
ডালপালা।
আমাদের বাগানের আমগাছের ওপরের দিকের ডালে এক ঘুঘু দম্পতি বাস করে। আমি উঠোন থেকে ওদের দেখতে পাই। সেদিনও সকাল থেকেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা। মাঝে মাঝেই ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে। ভীষণ মন খারাপ করা পরিস্থিতি। খোলা দরজা দিয়ে বাগানের দিকে তাকিয়ে দেখি আমগাছ থেকে ঘুঘু দম্পতির একটা নেমে এসে ঘাসের উপর বসে অনর্গল ডেকে চলেছে ঘুঘুর ঘু…..ঘুঘুর ঘু করে। জোড়ার অন্য ঘুঘুটা উড়ে এসে তার গা ঘেঁষে বসতেই আগের ঘুঘু মুখ ঘুরিয়ে নিলো। এরকম বেশ কিছুক্ষণ চলার পর, হঠাৎই দুজনেই উড়ে গিয়ে ভেঙে পড়া আমডালের পাশের ডালটাতে বসলো। তারপরেই শুরু হল ওদের অসম্ভব রকমের ভালোবাসা-বাসি। বুঝলাম,শত ধ্বংসের মধ্যেও সৃষ্টির যে বীজ লুকিয়ে আছে তাকে অস্বীকার করা যায় না। ঘুঘু পাখিদুটোকে অমন ভালোবাসায় আবব্ধ থাকতে দেখে মনটা ভালো হয়েছিল। মেঘলা দিনের আবছা আলোয় ওদের ভালোবাসার দৃশ্যও আমি ক্যামেরায় ভিডিও করেছি। ওদের ওই মুহূর্ত চলেছিল বেশ কিছুক্ষণ। ওদের সেই অন্তরঙ্গতার ভাব দেখে সেদিন ওই বিপদের সময়ে এই ভালোবাসার একটা আসল মানে খুঁজে পেয়েছিলাম। প্রজনন মরসুম ছাড়াও ওরা সবসময় এমনই জোড়ায় জোড়ায় থাকে। যখন তখন উপচে পড়ে ওদের ভালোবাসা।
এ তো গেলো ঘুঘু পাখিদের ভালোবাসার কথা। সব পাখিদেরই
এমন ভালোবাসার অনেক গল্প আছে।
সব প্রাণীরাই রাতে ঘুমোয়। রাত আঁধারে পাখিরাও
ঘুমিয়ে পড়ে,আবার ভোরের আগেই তারা জেগে ওঠে। কিন্তু পাখিকে কি কেউ ঘুমোতে দেখেছেন! বিশেষ করে
ঘুঘু-পাখিকে? তাও আবার ভাত-ঘুমে ঘুঘু পাখি?সম্ভবত:
সেটা কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। এবার
বলবো সেই গল্প।
রোজ দুপুরবেলা পাখিদের জন্যে দুমুঠো ভাত বরাদ্দ
থাকে আমার বাড়িতে। বাগানে ঘাসের উপর ভাত
ছুঁড়ে দিলে ওরা ভালো করে খেতে পারে না। নীচে
সিমেন্ট বাঁধানো জায়গায় দিলে কুকুর-বেড়াল এসে খেয়ে নেয়,পাখিরা
পায় না। তাই রোজ রান্নাঘরের চালে ভাত ছুঁড়ে দিই ওদের জন্যে। ভাত দিলে আগে
শালিক-বুলবুলি এসে খেয়ে চলে যায় তারপর অন্য পাখিরা আসে। সব শেষে ঘুঘু পাখি আর
কাঠবিড়ালি আসে ভাত খেতে। ঘুঘু পাখি ভাত খাওয়া শেষ করে উঠোনের বাউন্ডারি পাঁচিলে
এসে বসে থাকে।
এরকমই একদিন ভাত দিয়েছি। অন্যদিন শুধু ভাত দিই,সেদিন
তরকারির কয়েকটা আলু একটু শক্ত ছিল,তাই সেগুলো জলে ধুয়ে ছুঁড়ে
দিয়েছিলাম। ঘুঘুটা বেশ আরাম করে আলু-ভাত সব খেয়ে নিয়ে যথারীতি পাঁচিলে এসে বসলো।
আমি খেয়ে উঠে রান্নাঘর পরিষ্কার করছি। আমার কত্তা-মশাই খেয়ে উঠে হাতমুখ ধুয়ে উঠোন
থেকে বারান্দায় উঠে এসে চুপিচুপি আমায় ইশারা করলো পাঁচিলের দিকে তাকাতে। ওমা!
পাঁচিলের দিকে তাকিয়ে দেখি ঘুঘুটা ঘুমেতে ঢুলে ঢুলে পড়ছে! যেমন করে আমরা ভাত খেয়ে
উঠে হাতে ফোনটা নিয়ে চেয়ারে বসে ঢুলে ঢুলে পড়ে যাই,আবার জেগে
উঠি। ঠিক তেমনি করে সেও ঢুলছিল। তাই দেখে সব ফেলে রেখে হাত ধুয়ে-মুছে ক্যামেরা বার
করে নিয়ে এসে ভিডিও তুলেছি। আমাকে পাত্তা না দিয়ে সে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো।
ক্যামেরাতে খ্যাচাত শব্দ শুনে লাল চোখে এমন করে তাকালো মনে হল বেশ রেগে গিয়েছে সে।
ততক্ষণে অনেক কটা ছবি আমি তুলে ফেলেছি।
পাখি পরিচিতি : গায়ের পালক ছিট ছিট নকশা কাটা বলে একে ছিটে ঘুঘু বলে।
কোথাও-বা তিলা ঘুঘু বলা হয়।
বৈজ্ঞানিক নাম: Spilopelia
Chinensis. স্ত্রী পুরুষ একইরকম দেখতে। এরা
“ক্রু-রুরু-ক্রু-রুরু..…….ক্রু ক্রু ক্রু” শব্দ করে ডাকে। সারাবছরই গাছে,বাড়ির
কার্নিশে,টালি অথবা এসবেস্টসের ফাঁকে এরা বাসা বানায় তাতে
দু-তিনটে করে ডিম পাড়ে। দানাশস্য যেমন,ধান গম সর্ষে এদের প্রধান খাদ্য।
কণ্ঠি ঘুঘু (Eurasian Collared Dove)
রোজ রোজ বিভিন্ন পাখি দেখতে দেখতে
তবেই পাখি চেনা হয়। আর পাখি চিনতে চিনতে তাদের জানার কৌতূহল বাড়ে। পাখিদের
জীবনযাত্রার পরিচয় পেতে হলে অবশ্যই নিরীক্ষণ করতে হয়।
এই যেমন পেতে পারি! এই কথাটা আমার
চিন্তার মধ্যেও কখনও আসেনি। তাই হঠাৎ করে আকাঙ্ক্ষিত কিছু পেয়ে গিয়ে সকাল থেকেই
আমার ভেতরে একটা উৎফুল্লতা, বেশ খুশি খুশি একটা ভাব লেগেই
রয়েছে। ব্যাপারটা যদিও তেমন কিছুই নয়, তবে আমার কাছে অনেক কিছু!
ধোঁয়াশায় না রেখে একটু গুছিয়েই বলি। শুধু একটু
ধৈর্য্য নিয়ে পড়তে হবে।
একদিন সকালবেলা সময় তখন প্রায় 9:30
হবে। টিফিন তৈরি করে সবাইকে খেতে দিয়ে,এক কাপ চা নিয়ে রান্নাঘরের সামনে
দাঁড়িয়ে আরাম করে চুমুক দিয়েছি। উঠোনের খোলা দরজাটা দিয়ে দরাজ হাওয়া আসছে। আমার
উঠোনের দরজাটা সব সময় খুলেই রাখি। খোলা দরজা দিয়ে বাগানের সব কিছু দেখা যায়। যেমন,কোন পাখি
এলো! কোন পাখি উড়লো! কোন পাখি কোন গাছের ফল খেলো! একা না দোকা, নাকি দল
বেঁধে? এসব কিছু দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। সংসারের কাজ করতে
করতেই সেসব খেয়াল রাখি। কিন্তু তাদের দেখতে পেলেই সব ফেলে চটপট ক্যামেরা বার করে
এনে ছবি তুলি।
বার্ডিং-এর জন্যে মাঝে মধ্যে যাই
তবে রোজ রোজ বাড়ির চারপাশে এত পাখি দেখতে পাই তাই আলাদা করে খুব একটা কোথাও যেতে
পারিনা।
এতক্ষণ যা বললাম সেসবই অ-দরকারি কথা।
যাইহোক, চা খেতে
খেতে হঠাৎ করে দুটো পাখিকে দেখে চোখ আটকে গেল। প্রথমে মনে হল, ওঃ এতো
ঘুঘু! সব সময়ই এখানে চরছে। তবে ঘাড়ের কালো দাগটা দেখে মনে হালকা একটা সন্দেহ হল,আরে:! এটা
তো আমাদের তিলাঘুঘু নয়! নিমেষে বারান্দা-উঠোন পেরিয়ে বাগানে মুখ বাড়িয়ে দেখি আমার
অনুমান একেবারে ঠিক! দেখি "কন্ঠিঘুঘু" আমার দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে! কিন্তু
এদের তো এখানে দেখতে পাওয়া যায় না! এরা এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলের পরিযায়ী পাখি।
আমার উঠোনের দরজা থেকে মাত্র
দু-হাত তফাতে জোড়া কন্ঠিঘুঘু ঘুরে বেড়াচ্ছে নিশ্চিন্তে! ছবি তুলবো বলে ক্যামেরা
নিয়ে আসতে ঘরে যেতে যেতে একবার মনে মনে বলেও নিলাম,তোরা এসেই
যখন পড়েছিস যেন উড়ে চলে যাস না! নাঃ,উড়ে যায়নি।
খেয়াল করলাম ওরা রোজ আসতে শুরু করেছে।
এমনকি রান্নাঘরের চালে ভাত খাওয়ার সদস্য
হয়ে গিয়েছে অন্য পাখিদের সঙ্গে।
এরা একই প্রজাতির পাখি,স্বভাব
বৈশিষ্ট্যে এরা একই রকম।
পাখি পরিচিতি : কন্ঠিঘুঘু (Eurasian Collared
Dove)
বৈজ্ঞানিক নাম : স্ট্রেপটোপেলিয়া
ডেকাওক্টো (Streptopelia Decaocto)
কণ্ঠি-ঘুঘুর বেশ হালকা পাতলা দোহারা গড়ন। ঘাড়ে
অর্ধচন্দ্রাকৃতি কালো দাগ আছে। দাগটা এতই স্পষ্ট,যে অনেক
দূর থেকে লক্ষ্য করা যায়। এই দাগটার জন্যে একে কন্ঠিঘুঘু বলা হয়। শরীরের উপরের অংশ
ধূসর বালি রঙা। ডানার পালক কালচে রঙের দূর থেকে দেখলে মনে হয় তাতে নকশা কাটা আছে।
নীলচে-ধূসর বুক। চোখের চারপাশ পালকহীন ধুসর-গোলাপি চামড়ায় ঢাকা। কালো ঠোঁট। পা ও
পায়ের পাতা উজ্জ্বল লাল রঙের।
ক্রমশ ……
৮ম পর্ব পড়ুন আগামী শনিবার
।
বিঃদ্রঃ – সব ছবি এবং ভি ডি ও লেখিকার নিজের তোলা ।
লেখিকার জীবনের সঙ্গে গল্প অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িয়ে আছে। যা দেখেন, যা শোনেন, যা শোনেন, যা কিছু স্মৃতির পাতায় জড়িয়ে আছে মনের সাথে,তাই নিয়ে লিখতেই বেশি পছন্দ করেন।
লেখা শুরু স্কুল-ম্যাগাজিন, কলেজ -ম্যাগাজিন দিয়ে। বর্তমানে কিছু লেখা প্রকাশিত হচ্ছে কয়েকটি মাসিক-ত্রৈমাসিক পত্রিকায়। বর্তমানে বার্ড’স ফটোগ্রাফী এবং “পাখি-প্রকৃতি” নিয়ে লেখা শুরু করেছেন।