Advt

Advt

ten-comandments-old-testament-story-by-nandita-saha-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-টেন-কমান্ডমেনডস--ওল্ড-টেস্টামেন্টের-গল্প-নন্দিতা-সাহা

ধারাবাহিক প্রতি  বুধ ও রবিবার

(ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে)

ten-comandments-old-testament-story-by-nandita-saha-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-টেন-কমান্ডমেনডস--ওল্ড-টেস্টামেন্টের-গল্প-নন্দিতা-সাহা

শুরু হল মোজেসের পথ চলা। আতঙ্ক উত্তেজনা সাহস নিয়ে সে ফিরে চলল মিশর,সঙ্গী হল স্ত্রী, পুত্র,কন্যারা। ইজরায়েলী দের ফিরিয়ে আনতেই হবে কিন্তু মিশরে প্রবেশ করলেই যদি তার মৃত্যুদণ্ড হয়!  সে যে এক মিশরীয় কে হত্যা করেছে!! তবে!! কিন্তু তার অন্তরের অন্তঃস্থলে যে ঈশ্বর বসে আছে তিনি তাকে সাহস যোগাচ্ছেন,“ভয় নেই,আমি তোমার সাথে আছি “ ।

মোজেস  এসে  পৌঁছল মিশর প্রদেশে,ফারাও-র সামনে গিয়ে শান্ত স্বরে আর্জি পেশ করল , 

_  ঈশ্বর আদেশ করেছেন সব ইজরায়েলী  দের মুক্তি দিতে ।

ফারাও এর মুখে  অবজ্ঞার হাসি,

_  একটি   ইজরায়েলী কে ছাড়া হবে না,একটি কেও  না।

ফারাও ইজরায়েলীদের ওপর আরও কঠিন হল অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে গেল। ধীরে ধীরে মোজেসের ওপর ইজরায়েলীরা  বিরূপ হয়ে উঠল।  সবাই সমস্বরে  বলল,তুমি চলে যাও তুমি চলে যাও। তোমার জন্য আমাদের ওপর এত অত্যাচার হচ্ছে তুমি চলে যাও,তুমি অপয়া,  আমরা  তোমাকে চাই না ।

কিন্তু মোজেস ফিরে যাবে কি করে? তাকে যে সর্বশক্তিমান এর আদেশ পালন করতেই হবে,  ইজরায়েলীদের মিশর থেকে মুক্ত করতে হবে,তাদের সুদিন নিশ্চয়ই আসবে।

মিশর প্রদেশে শুরু হল ব্যাধি মহামারী।  বিষাক্ত কীট পতঙ্গে ভরে গেল।  ফারাও মুক্তি দেবে না   ইজরায়েলীদের!!  ঈশ্বরের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে পড়েছে। নাহ! এইভাবে হবে না আরও কঠিন সাজা দিতে হবে মিশরীয়দের।  ঈশ্বর মোজেসের কানে  ফিসফিস করে বললেন,এইবার এমন বিধান দেবো  যে  ফারাও   তোমাদের সবাইকে মুক্তি নয় জোর করে বের করে দেবে মিশর থেকে।

মিশরীয়দের ঘরে ঘরে কান্নার রোল। নবজাতকেরা ভূমিষ্ঠ হবার সাথে সাথে তারা মারা যাচ্ছে মায়ের কোল খালি হচ্ছে। শেষমেশ ফারাওয়ের প্রাসাদের নবজাতকের মৃত্যু হল।  আর দেরি নয় ফারাও এবার আতঙ্কিত। সেই রাতেই সব  ইজরায়েলীদের মিশর ছেড়ে চলে যাবার আদেশ দিল ক্ষুব্ধ ফারাও। আতঙ্কিত ভয়ে ভীত ফারাও  নিজে।

উল্লসিত  ইসরায়েলীরা যে যেমন ছিল ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ল, রুটির মত রুটি পড়ে রইল, পড়ে রইল কুঁড়েঘর তারা এখন মুক্ত,দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত স্বাধীন। তাদের পায়ে  বেড়ি  নেই ।  মুখে হাসির ফোয়ারা নিয়ে মোজেসকে সবাই অনুসরণ করল। ঈশ্বর তাদের জন্য  যে  নির্দিষ্ট জায়গা রেখেছেন সেই  ক্যানন এ  তাদের পৌঁছুতেই হবে, সেখানে তাদের জীবন কাটবে আনন্দে ।

রাতদিন তাদের পথচলা শুরু হল ।  নারী-পুরুষ ,আবাল বৃদ্ধ বণিতা কখনো মরুভূমির তপ্ত বালি,মাথার ওপর  প্রখর রৌদ্র কখনো কাটা গুল্ম কখনো শক্ত পাথরের পথ।   পায়ে ফোসকা! পা কেটে রক্ত ঝরছে তবুও তারা এগিয়ে চলে। এই পথ চলা মোটেই সুখকর নয়,বিপদ সংকুল কণ্টকময়,তবু তারা পিছিয়ে পড়েনি।  মোজেসকে অনুসরণ করে তারা এগিয়ে চলেছে নির্দিষ্ট জায়গায় ঈশ্বরের নির্দিষ্ট  ক্যানন এর  দিকে।

ইজরায়েলীরা  মিশর ত্যাগ করতেই   হুঁশ  ফিরল  ফারাও এর, সবাই তো চলে গেল,কিন্তু  এত কাজ করবে কারা? মিশরীয়রা তো সবাই রাজা তারা কি করে পাথর ভাঙবে? ইট তৈরি করবে? মাটি কেটে ফসল ফলাবে? ভেড়ার দল নিয়ে রৌদ্রে ঘুরে বেড়াবে? এসব কাজ তাদের জন্য  নয়। তবে উপায়? ফারাও এর  নির্দেশ  এখুনি যতজন পারো  ইজরায়েলীদের  ধরে আনো।  আবার তারা ক্রীতদাসের কাজ করবে 

ফারাও এর ইশারায়  সৈন্যরা   তৎক্ষণাৎ  ধূলি উড়িয়ে রওনা হল,ইজরায়েলীদের  ধরতেই হবে।

ইজরায়েলীরা  কখনো একমাথা বৃষ্টি নিয়ে কখনো কুয়াশার মধ্য দিয়ে কখনো এক মাথা রৌদ্র নিয়ে এগিয়ে চলল লোহিত সাগরের দিকে। সাগরের ওই পারে যেতে হবে তবেই তাদের মুক্তি ।   তারা  লোহিত সাগরের সামনে পৌঁছে গেছে। ঠিক তখনই বিপদের আভাস স্পষ্ট, প্রতিটি ইহুদীর চোখে মুখে আতঙ্ক !  ওই দূরে দেখা যায় ঘোড়া ছুটিয়ে আসছে  সৈন্যর  দল।  তবে উপায়! চার দিক থেকে বিদ্রূপ কটাক্ষ ছুটে এলো মোজেস এর দিকে,তার জন্যই আজ সকলের  মৃত্যু হবে।

পেছনে সৈন্য তরবারি উঁচিয়ে,সামনে অশান্ত সমুদ্র!! কাতর আর্তনাদে ভরে উঠল সমুদ্রতট।  কিংকর্তব্যবিমূঢ় মোজেস ।  সত্যিই তো বাঁচার তো আর উপায় নেই !    তক্ষুনি  মোজেসের মনে পড়ল তার জাদু দণ্ডের কথা ঈশ্বর তাকে দিয়েছেন। আর দেরি নয় ,মোজেস তার দণ্ড সাগর জলে স্পর্শ করালো মুহূর্তে জল উঁচু দেয়ালের মতো দুই দিকে সরে গেল মাঝে মসৃণ পথ। মোজেসের ইশারায়  সবাই সেই পথে তাকে অনুসরণ করল,ভয়ংকর পরিস্থিতি সবাই প্রাণ হাতে নিয়ে পালাতে ব্যস্ত, ঊর্ধ্বশ্বাসে কেবল ছুটছে।  পেছনে  ভয়ানক বেগে ছুটে আসছে মিশরীয় সৈন্য।  সৈন্যের  হাতে পড়লে নির্ঘাত  মৃত্যু। সবার আগে মোজেস,তার পেছন পেছন হাজার হাজার ইজরায়েলী ।   প্রথমে ভয় দ্বিধা ! এই পথে কি পা বাড়ান ঠিক হবে?  শিগগিরই সব সাহস নিয়ে অনুসরণ করল তাদের দল নেতা  মোজেসকে।   দেখতে দেখতে  সবাই পৌঁছে গেল সমুদ্রের অপর-প্রান্তে,শেষ ইজরায়েলীটি  পৌঁছতেই মোজেস তার যাদুর দণ্ড আবার স্পর্শ করালো,মুহূর্তে সমুদ্রের জল মিলেমিশে এক হয়ে সমুদ্রে ঢেউ উঠলো, ভেসে গেল, তলিয়ে গেল অত্যাচারী ফারাওর  সৈন্য  দল ।     

ইজরায়েলী   শিবিরে তখন উচ্ছ্বাস আনন্দ সবার মুখে কেবল মোজেসের জয়জয়কার। তারা গাইছে তারা নাচছে মোজেসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ।  ঈশ্বরের প্রতি,মোজেসের প্রতি শ্রদ্ধায় তাদের মন প্রাণ ভরে উঠল। আবার তাদের পথ চলা শুরু হল,শিশু,বৃদ্ধ,ভেড়ার দল নিয়ে   মোজেস এগিয়ে চলল

তপ্ত মরু বালি রাশির উপর দিয়ে হেঁটে চলেছে আবাল বৃদ্ধ বনিতা সাথে তাদের প্রিয় ভেড়ার দল,গরু, বাছুর   । নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে কেবল হেঁটে চলেছে। ঈশ্বরের নির্ধারিত  জায়গায় তাদের পৌঁছতেই হবে     অর্ধাহারে   অনাহারে শরীর ক্লান্ত , কোনও রকমে টেনে টেনে নিয়ে চলছে, মোজেস ওদের পথপ্রদর্শক     ধীরে ধীরে গলা শুকিয়ে কাঠ,জিভ  আড়ষ্ট হয়ে আসছে, ঠোট যেন আর নড়ছে না , একটু জল কেবল একটু জল চাই  তিন দিন পথ চলার পর হঠাৎ চোখে পড়ল জল!  ঐ-তো ঐ-তো জল—------ ।

চলো সবাই ওখানেই চলো।  ছুটে এলো জলের কাছে,  এবার আকণ্ঠ জল পান করবে তারপর আবার  চলা —------ !    অঞ্জলি ভরে জল মুখে  দিয়েই  মুহূর্তে   ফেলে  দিল , ছি ছি। এই জল পান করার যোগ্য নয়। মুখ তিক্ততায়  ভরে উঠল       এই জল পান করা অসম্ভব।     সবাই রক্তচক্ষু হয়ে তাকালো , ও-ই   ও-ই বুড়ো মোজেস এর জন্যই আজ এই অবস্থা !  কিন্তু   এত   কষ্ট আর যে সয় না।

মোজেস নিজেও বড় অসহায় তবু সে ধৈর্য হারায়নি,হারায়নি ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস। মোজেস কাতর, ঈশ্বরকে স্মরণ করলেন , সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে মোজেস তার জাদু দণ্ড ছোঁয়াল  জলে, জল এবার যেন অমৃত হয়ে গেল!!   অবাক সবাই।   তৃষ্ণা মিটিয়ে তারা আবার এগিয়ে চলল। ঈশ্বর তাদের খাবার বন্দোবস্ত করলেন, সূর্যোদয়ের মুহূর্তে সাত সকালে কোথা থেকে   বটের  পাখি  (তিতির জাতীয়) এসে জড়ো হল মরুভূমির ওপর,খুশিতে নেচে উঠলো  ইজরায়েলীরা ,   বাহ কি নিশ্চিন্ত  !  আগুনে পুড়িয়ে এবার ক্ষুধার  নিবৃত্তি  হল।  সত্যিই ঈশ্বর দয়ার সাগর  । তাদের ক্ষুধার  নিবৃত্তির  জন্য খাদ্য যোগাচ্ছে আড়াল থেকে।   মোজেসের প্রতি আরও বেড়ে গেল তাদের শ্রদ্ধা , তাদের সম্মান,  বিশ্বাস।  জল ,খাদ্য সবই তারা পাচ্ছে , আর চিন্তা নেই ।

মুসা  তার দল নিয়ে ধীরে ধীরে এসে পৌঁছলো সিনাই পর্বতের পাদদেশে , এখানেই কিছুদিন বিশ্রাম নেওয়া যাক। বেশ কিছু  সবুজ গাছ, পানীয় জলও আছে। মোজেস  এর নির্দেশে সবাই নিজেদের সকল প্রয়োজনীয় জামাকাপড় ধুয়ে স্নান সেরে নিলো।   প্রথম দুইদিন এভাবেই কেটে গেল তৃতীয় দিন হঠাৎ পর্বত চূড়ায় কালো মেঘ বজ্র-বিদ্যুতের ঝলকানি।   উফ কি বিকট ভয়াবহ শব্দ !   চারিদিক গমগম করে উঠছে ।    তার ই   মাঝে   শঙ্খ নিনাদের  মত গম্ভীর কণ্ঠস্বর  ভেসে আসছে দূর থেকে,পর্বত ধীরে ধীরে কালো ধোঁয়াশায় ঢেকে গেল   একেবারেই অন্ধকার হয়ে গেল ।  সবাই কাঁপছে কেউ  মূর্ছা   গেল ,    শিশুর ক্রন্দন রোল উঠলো। মোজেস আর দেরি করল না সে জানে ঈশ্বর পর্বত শৃঙ্গে উপস্থিত, এই ভয়াবহ পরিবেশ তারই উপস্থিতির লক্ষণ।     মোজেস রওনা হল , তাকে   যে     কালো মেঘের মাঝে   যেতেই হবে ।    সকলকে সান্ত্বনা দিয়ে ভয় বিসর্জন দিতে বলে মোজেস ধীরে ধীরে প্রবেশ করল সেই   কালো মেঘে, আর তাকে দেখা গেল না । সিনাই পাহাড়ের পাদদেশে সবাই অপেক্ষায় কখন আসবে   মোজেস ?  ফিরে আসবে তো ?   কিন্তু কখন   ?  তাদের মনে নানা প্রশ্ন ।

প্রিয় মোজেসকে দেখে ঈশ্বর বড়   আল্লাদিত ।  যদিও ঈশ্বরের কোন অবয়ব মোজেসের চোখে পড়লো না তবে আকাশে বাতাসে তার উপস্থিতি স্পষ্ট। ঈশ্বর   তার   প্রিয় মোজেসকে দশটি উপদেশ শোনালেন  ,

আমার আগে তোমার অন্য কোন দেবতা থাকবে না ।

আমার কোন মূর্তি  তৈরি করবে না ।

ঈশ্বর বা প্রভুর নাম  অনর্থক  গ্রহণ করবে না ।

ছয় দিন কাজ করবার পর সপ্তম দিনটি বিশ্রাম বার, পবিত্র রেখ ।

তোমার বাবা মা কে সম্মান কোরো ।

তুমি  কাউকে খুন করবে না ।

ব্যভিচার  করবে না ।

চুরি  করবে না ।

কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না ।

তুমি লোভ করবে না

নিজের  হাতে পাথরে সেই উপদেশ খোদাই করলেন।  প্রতিটি মানুষ যেন এই উপদেশ পালন করে তবেই ঈশ্বর সন্তুষ্ট ।   ঈশ্বরের প্রতিটি উপদেশ মাথায় নিয়ে মোজেস ফিরে এলো,নেমে এলো। সিনাই পর্বতের নিচে সবাই মিলে বেদি  তৈরি করে ঈশ্বরকে পুজো করল।    মোজেসকে ফিরে পেয়ে সবাই খুশি,  মোজেস  একে একে দশটি আদেশ তার লোকেদের শোনালো 

এইবার সিনাই   পর্বত পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবার পালা | প্রস্তর ফলক দুটো সিন্দুকে রেখে  কাঁধে নিয়ে তারা রওনা হলএই   সিন্দুক তাদের কাছে সবচাইতে পবিত্র , এতে ঈশ্বরের বাণী  লিপিবদ্ধ আছে ।

ক্যানন------- এখনো বহু পথএগিয়ে চলল সকল কষ্ট মাথায় নিয়েভয় কি , তাদের সাথে রয়েছে তাদের  প্রিয় মোজেস।

এইভাবে দীর্ঘ ৪০ বছর কেটে গেল।  অভিশপ্ত এই সময় ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছে,     মোজেস এখন বৃদ্ধ ,ইতিমধ্যে বহুজনের মৃত্যু হয়েছে।  কিছু নতুন শিশুও  ভূমিষ্ঠ হল       মোজেস এখন দুর্বল তার শরীর নুয়ে এসেছে    দলনেতার কঠিন দায়িত্ব পূর্ণ কাজে সে ধীরে ধীরে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যাচ্ছে     মোজেস  ইজরায়েলীদের সাথে বসল  , তার অক্ষমতার কথা জানালো।  সে আর এখন সোজা হয়ে হাঁটতে পারেনা, দরকারে  দৌড়তে পারেনা । শরীর তার রুগ্ন ,বড্ড  শ্বাসকষ্ট     তারও দিন হয়ে দিন শেষ হয়ে আসছে       সে   ইজরায়েলী দের উদ্দেশ্যে বলল, ঈশ্বরের নির্দেশ সে কোনদিন পৌঁছতে পারবে না  প্রতিশ্রুত জায়গায় তাই ইজরায়েলীদের উচিত নতুন দলনেতার যে তাদের পৌঁছে দেবে   ক্যানন  এ ।   কিন্তু কে হবে সেই দলনেতা? কে সেই কঠিন কাজে সক্ষম ?

মোজেস ডেকে   নিলো   তার প্রিয় সঙ্গী জেসুয়াকে , বলল,“ জেসুয়া  শক্তি সঞ্চয় করো সাহসী হয়ে ওঠো কারণ তুমি হবে দলনেতা ।   প্রভু সর্বদা তোমার সাথে থাকবেন তিনি কখনো তোমায় ছেড়ে চলে যাবেন না ।     বিপদে ভেঙে পড়োনা নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ো না  ‘’’ ।

জেসুয়া   মাথা পেতে নিলো এই দায়িত্ব    সেও বিশ্বাস করে ঈশ্বর তার সহায় থাকবেন। মোজেস নিশ্চিন্ত হল এইবার শেষবারের মতো ঈশ্বরের সকল নির্দেশ নিজের হাতে লিপিবদ্ধ করল। সেই বইটি রাখা হল পবিত্র সিন্দুকের পাশে       ইজরায়েল এর  অতীত কাহিনী নিয়ে সুর বাঁধলেন, ইজরায়েলীরা  সেই গান কণ্ঠস্থ করল।   আহা  ,  মজেস বড় তৃপ্ত , ইজরায়েলীরা  তাদের ইতিহাস ভুলে যাবে না , এই সুর তাদের এক সূত্রে বেঁধে রাখবে চিরকাল     মোজেস এবার নিশ্চিন্তে মৃত্যুবরণ করতে পারে     তারও দিন ফুরিয়ে এলো ।   মোজেস বসে থাকে সেই প্রতিশ্রুত ভূখণ্ডের দিকে মুখ করে —-------  !    মনে বড় আশা ছিল কিন্তু। ---------মোজেসের বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস  ! মোজেস এখন ঝুকে-ঝুঁকে  হাঁটে       মৃত্যু তার দোরগোড়ায় কিন্তু ঠিক এই সময়ে ঈশ্বরের নির্দেশ এলো প্রভুর ইচ্ছে মোজেস নেবো  পাহাড়ে যাক। পর্বত চূড়া থেকে ক্যানন  এর  দৃশ্য  সম্পূর্ণ দেখা যায়  । সেইখান থেকে   মোজেস ক্যানন দেখতে পাবে       চির আকাঙ্ক্ষিত  ক্যাননেরর স্বাদ নিয়ে তবে তার স্বর্গ লোকে  যাত্রা    প্রভু বললেন,

আমি তোমার পূর্বপুরুষ আব্রাহাম আইজ্যাক এবং জেকব-কে যে কথা দিয়েছিলাম মৃত্যুর পূর্বে তুমি একবার সেটির আনন্দ নাও   ‘’ ।

প্রভুর নির্দেশ মতো মোজেস বহু কষ্টে পৌঁছল নেবো  পর্বতে । ওপর থেকে  নিচে  তাকাল    ক্যানন  দেখে সে  আপ্লুত ।    জীবনের শেষ ক্ষণে এই আনন্দটুকু নিয়ে মোজেস মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল     

ক্রমশ ………

পরের অংশ পড়ুন আগামী বুধবার ।


লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি -

জন্ম পশ্চিমবঙ্গ-র কুচবিহার শহরে। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। প্রথম কবিতার বই ' সুখের ঠিকানা', গল্প সংকলন 'চিরন্তন'। ইংরেজি কবিতার বই  'Bouuet of Poems'  বিভিন্ন পত্রিকায় লেখেন। বেশকিছু কিশোর সংকলনে গল্প প্রকাশিত হয়েছে। 

স্টেটস্‌ম্যান, সুখবর, সকালবেলা ইত্যাদি খবরের কাগজে গল্প প্রকাশিত হয়েছে।  দেশ,  সানন্দা, প্রসাদ, সারথি পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। 'Times of India'-তে বেশ কয়েকবার কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা দিয়ে সাহিত্য জীবনের শুরু।বর্তমানে কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য গল্প লিখতেই বেশি ভাল বাসেন ।  বহু e magazine এ লেখেন ।