Advt

Advt

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-68th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী

ধারাবাহিক উপন্যাস প্রতি বৃহস্পতিবার ।

পর্ব - ৬৮

Too many journeys  lie for him ahead,

too many galleys and page-proofs to be read,

he would like to lie down

In your sweet  silence,to whom was not denied

the mysterious late excellence which is the crown of our trials and our last bride.

প্রতিশোধ কি ভালবাসার  আরেক নাম  হতে পারে?

অধিকারবোধ কি ভালবাসার  আরেক নাম  হতে পারে?

প্রেম,নাকি না -প্রেমের আরেক নাম  প্রতিশোধ? মারিয়া আর জোসেফ বিবাহিত,ভালবাসার  পৃথিবীতে সারা নামের মেয়েটি কোন ভূমিকায় অবতরণ  করেছিল।

বাভ্রবি সারার,এই একরৈখিক  প্রেম -অথবা না-প্রেমের  কাহিনী শুনতে শুনতে এই  কথাই ভাবছিল। জোসেফকে সারা ,একটি গোটা রাত ওর ঘরে আটকে রেখেছিল। জোসেফকে সেদিন  সারা আকণ্ঠ  হাড়িয়া খাইয়ে ছিল। মারিয়া তখন সুন্দরগড় ওর মা,বাবার  কাছে ছিল। জোসেফের  বাবা সনাতন কোনও  সন্দেহ  করেনি। ওদের  ও দাওয়াত  ছিল। ওরা খেয়েদেয়ে চলে এসেছিল। সারা হেসে বলেছিল--"জোসেফ  একটু পরে যাবে।"

সারা রাত সারার সঙ্গে জোসেফ;অনেকটাই  মাতাল। শেষ রাতে নিজের বাড়িতে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিল;সুন্দর গড়ে মারিয়া সারারাত  জোসেফের  ফোনের  অপেক্ষা করে করে একসময় ক্লান্ত  হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। সকালের  আলোয় জোসেফের  ঘুম এবং হ্যাং ওভার  কেটে যেতেই  মারিয়ার  কথা মনে পড়ল। মারিয়া হয়ত সারারাত ওর ফোনের  অপেক্ষা করেছে--। তাড়াতাড়ি মারিয়াকে ফোনের করল জোসেফ;

--"আমার খুব অন্যায় হয়ে গেছে মারিয়া--আসলে কাল রাতে সারা আমাকে এতো মদ খাইয়েছে--আমার  কিছুই মনে পড়ছিল  না।খনও  মাথাটা ভার ভার লাগছে--।"

--"ঠিক  আছে গো।  তুমি সাবধানে থেকো।"

মারিয়া,এতোটাই  সরল মেয়ে ছিল ম্যাডাম  জী,একবারের  জন্য ও সারাকে  খারাপ  ভাবে নি। জোসেফ কিন্তু  সে রাতের  পর থেকে সারাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করল। আর সেটাই  হলো কাল।

--"কিঁউ?"

সারা হঠাৎই  জোসেফের  নামে রেপ কেসের অভিযোগ  আনল।

--"সেকি?"

রামদীন  মাথা নেড়ে বলল

--"হাঁ,ম্যাডাম  জী--বিলকুল  ওহি হুয়া। মারিয়া কো ভি ঠিক  সে পতা নেহি হ্যাঁয়--পর,পুলিশ নে যব জোসেফ কো গ্রেফতার কর লিয়া,আউর উসকা জেল কাষ্টডি হো গিয়া,তব মারিয়া জোসেফ সে মিলনে গিয়া--।

বাভ্রবি মিসিং লিঙ্ককে জোড়া লাগানোর  চেষ্টা করছিল--

গরাদের  ওপাশে জোসেফ,এপাশে মারিয়া।

জোসেফ চোখ তুলে মারিয়ার চোখের  দিকে তাকাতে পারছিল না।

--"বিশ্বাস  করো ,মারিয়া,আমি সারাকে রেপ করিনি। সেদিন  রাতে সারা আমাকে এতো মদ খাইয়েছিল--আমার  মাথা কাজ করছিল না--যদি সারা নিজে কিছু--"

মারিয়া নিজের হাত তুলে জোসেফের  মুখে রাখতে চাইছিল--কিন্তু  মাঝখানে লৌহ কারাগার-

--"আমি জানি ,জোসেফ, আমি নিজের থেকে ও তোমাকে বেশি বিশ্বাস  করি--আমরা সবাই  বিশ্বাস  করি তুমি কিছুই করোনি। আমরা একজন উকিল  ঠিক করেছি--তোমার  বেইল হয়ে যাবে।"

জোসেফ  মৃত মাছের  মতো চোখ তুলে বলল

--"আমার  চাকরি চলে গেছে,তাই না,,?"

মারিয়া নিজের  ঠোঁট উপরের  দাঁতে চেপে বলল

--"একবার  নির্দোষ প্রমাণিত হলে তুমি তোমার  চাকরি ফেরৎ পেয়ে যাবে জোসেফ।  তোমার  অফিসের  সবাই  বিশ্বাস  করেন--"

জোসেফ  মারিয়াকে থামিয়ে দিয়ে ম্লান হেসে বলল

--"মাসের  পর মাস কেস গড়াবে--উকিলের খরচ যোগাতে  যোগাতে  তুমি বুড়িয়ে  যাবে-"

মারিয়া চোখের  জল চেপে কান্নাভেজা গলায় বলল

--"এরকম বোলো না জোসেফ,আমি তোমার  জন্য,আমাদের ভালবাসা জন্য সব করতে পারি।"

সময় হো গিয়া--

জোসেফ আর কিছু না বলে,একবার  ও পেছনে না তাকিয়ে অন্ধকার  সেলের  দিকে চলে গেল-

মারিয়া আস্তে আস্তে উজ্জ্বল  রোদে ভেসে যাওয়া পথে দাঁড়িয়ে ভাবছিল--সত্যিই  সে কি জোসেফ  কে জেল থেকে ছাড়াতে পারবে? পারবে ওর জামিন করাতে? দৃঢ়তার সঙ্গে সে নিজেই  নিজেকে বলল--"আমাকে পারতেই  হবে। দরকার  পড়লে আমি সারার  সঙ্গে কথা বলব। হ্যাঁ,আমাকে সারার  সঙ্গে  কথা বলতেই  হবে---।

তারপর, যেন ভোজবাজির মত সবকিছু ঘটে গেল। পরের দিন সারা তার কমপ্লেন  তুলে নিলো--এবং--

--"আউর?"

বাভ্রবির  প্রশ্নের  উত্তরে রামদীন  হাসল।

--"আউর,জোসেফ কো মুক্তি মিল গিয়া--"

মারিয়া একগুচ্ছ  লাল গোলাপ  নিয়ে জেলের  ফাটকের  বাইরে। জোসেফ বেরিয়ে আসতেই মারিয়া হেসে জড়িয়ে ধরল  --মারিয়া ভুলে গল যে এটা পাবলিক  প্লেস। জোসেফ ও হাতে মারিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলল--"মারিয়া,মেঁ আজ বহুত  খুশ হুঁ। লেকিন  ইয়ে সম্ভব ক্যায়সে হুয়া?"

আনন্দে মারিয়ার চোখে প্রায় জল এসে গিয়েছিল।  হাসতে হাসতে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলল--"সব কুছ ইঁহাই শুনোগে ক্যায়া? ঘর নেহি চলোগে? বাপুজি, মাম্মি  তুমহারা ইন্তেজার কর রহেঁ হ্যাঁয়।"

খুশি ,খুশি,খুশি--খুশির  সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিল ওরা দুজন।

বারবার  মারিয়াকে জিজ্ঞেস  করে ও সঠিক  উত্তর  পায় নি জোসেফ।  এক সপ্তাহ  পরে জোসেফ  তার অফিসে জয়েন করল। সকলের উষ্ণ  অভিনন্দন  এবং  ভালবাসার উত্তাপ জোসেফ কে কারাবাসের দিনগুলো ভুলিয়ে  দিল--আর সেখানেই  একদিন  ,

দেখা হয়ে গেল সারার সাথে--;জোসেফ প্রথমে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল--সারাই কাছে এসে কোমরে দুহাত রেখে ওর রাস্তা বন্ধ  করে দাঁড়িয়ে বলল

--"মেরা জান,ক্যায়সে হো?"

জোসেফ  শুকনো হেসে বলল--"থ্যাঙ্ক ইউ-সারা। তুমনে ও ফলস কেস বাপস্ লে লিয়া--"

বারবনিতার মতো খিলখিল করে হেসে উঠেছিল সারা। জোসেফের  তখন ওকে ভীষণ ঘেন্না করছিল। জোসেফের  তখন ওর উপর  থু থু ফেলতে ইচ্ছে করছিল--জোসেফের তখন--সারা,তার সমস্ত  শরীরে ঢেউ  খেলিয়ে  হাসতে হাসতে বলল

--"ও মেরে জান--থ্যাংকস  তো তুমে মুঝে নেহি তুমহারি প্যারী মারিয়া কো হি দেনা হ্যাঁয়--মান লিয়া জান,ও তুমসে সচ্চা প্যার করতি হ্যাঁয়--"

হাড় হিম করা এক হাসি এবং একটি কঠিন  সত্যের  মুখোমুখি--জোসেফ--

 

ক্রমশ …………

৬৯তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার

লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি –        

জন্ম-কলকাতায়  আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা 

প্রকাশিত গ্রন্থ

১--সাপ শিশির খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)