Advt

Advt

pratham-sei-din-creation-story-from-old-testament-by-nandita-saha-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-প্রথম-সেই-দিন-নন্দিতা-সাহা

ধারাবাহিক - প্রতি রবিবার

pratham-sei-din-creation-story-from-old-testament-by-nandita-saha-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-প্রথম-সেই-দিন-নন্দিতা-সাহা

মহাশূন্য। অনন্ত অসীম মহা শূন্য। আকাশ বাতাস পৃথিবী কিচ্ছুটি নেই। কেবল আছেন এক এবং অদ্বিতীয় ঈশ্বর। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। প্রভু ঠিক করলেন একটি স্বর্গ একটি পৃথিবী বানাবেন। হল। কিন্তু পৃথিবীর সুষ্ঠ কোন আকার কোথায় ! সৌন্দর্য কোথায় ! কেবল অন্ধকার, গভীর ঘূর্ণায়মান কুয়াশা , আর জল ! জল রাশির ওপর প্রভু ঘুরে বেড়ান । প্রভুর মন ভরে না । সুন্দর করে মনের মত করে সাজাতে হবে পৃথিবী , একেবারে নিখুঁত । একটু আলোর দরকার ! প্রভু বললেন , “ লেট দেয়ার বি লাইট “। জ্বলে উঠল আলো। বাহ ! বেশ লাগছে । ঈশ্বর আলো থেকে আধার কে আলাদা করলেন , দুইজনের দুই পথ । সৃষ্টি হল দিন এবং রাত্রি । সৃষ্টি হল সন্ধে এবং সকাল , ঊষা কাল —------- ! সেই প্রথম সকাল । সৃষ্টির প্রথম দিন ।

দ্বিতীয় দিন । প্রভু জল রাশি দুই ভাগে ভাগ করলেন , কিছু ওপরে কিছু নীচে । মাঝের শূন্য স্থান টি কে নাম দিলেন , আকাশ । আকাশের নীচে জলরাশি নিয়ে সৃষ্টি হল সাগর , মহাসাগর , ঝরনা , নদী । দুপাশে জেগে উঠল স্থলভাগ , বালুকা তট ভূমি , পাহাড় , মরু। ঈশ্বর খুশি হলেন । তাঁর সৃষ্টি মনের মতই হচ্ছে ।

pratham-sei-din-creation-story-from-old-testament-by-nandita-saha-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-প্রথম-সেই-দিন-নন্দিতা-সাহা

তৃতীয় দিন! প্রভু সৃষ্টির উল্লাসে মেতে উঠেছেন। তৃতীয় দিন প্রভু স্থলভূমির ওপর নানা রঙ্গের নানা রূপের নানা আকারের গাছ গাছালি গড়লেন, গড়লেন ঘন বন জংগল। নানা স্বাদের ফল, শাক সবজি, নানা রঙ্গের ফুল । প্রতিটি ফুল ফলে একটি করে বীজ রেখে দিলেন । ভবিষ্যতে এই বীজ থেকেই আবার নতুন গাছ হবে। বড় বড় বৃক্ষ ছায়া দেবে । ছোট ছোট চারা গাছ ফল ফুলের সুবাস চরিয়ে দেবে । ঠিক যেমনটা চাইছেন তেমন টাই হচ্ছে । চমৎকার সবুজ বনানী। কেমন সবুজের বাহার, কেমন রঙ্গের বাহার। কিন্তু আর ও কিছু যদি —---- !

চতুর্থ দিন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গায়ে প্রভু পরম যত্নে এঁকে দিলেন চির শাশ্বত সূর্য , চন্দ্র। সূর্যের আলয় আলোকিত হবে দিন , চাঁদ তাঁর স্নিগ্ধ ছায়া ছড়িয়ে দেবে রাতের অন্ধকারে। ঈশ্বর আনন্দিত । ঠিক যেমনটা ভেবেছেন তেমনটাই রূপ পাচ্ছে । ক্রমে পৃথিবীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধীরে ধীরে সম্পূর্ণতা পাচ্ছে তাঁর সাধের পৃথিবী।

পঞ্চম দিন। প্রভু ধ্যান মগ্ন । হঠা ৎ অনুভাব করলেন কেমন যেন নিঝুম , নিঃশব্দ , নীরব , খানিক একঘেয়ে। কেবল বাতাসের সোঁ সোঁ শব্দ , সমুদ্রের তটভূমিতে জলরাশির আছড়ে পড়ার শব্দ । কি করা যায় ! প্রভু ভাবলেন । মুহূর্তে দুই চোখ তাঁর দপ করে উঠল ! সৃষ্টি করলেন ছোট ছোট নানা রঙ্গের, নানা প্রকারের জলজ প্রাণী _______ ছোট ছোট মাছ , তিমি , হাঙর আরও কত পোকা মাকড়। সাগরের জলে প্রাণের স্পন্দন । প্রভু আকাশের দিকে চোখ মেলে চাইলেন , শূন্য আকাশ , একঘেয়ে নীল! উড়িয়ে দিলেন ছোট বড় নানা আকারের পাখি । তারা এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত উড়ে বেড়ায়। গান গায় , গাছের ডালে বসে , কিচিরমিচির করে , ডানা ঝাপটায়, পাথরের খাঁজে, গাছের ডালে বাসা বাঁধে। দল বেঁধে আকাশে উড়ে বেড়ায় । ঈশ্বর আশীর্বাদ করলেন, তোমরা ভরিয়ে তোল এই আকাশ, পাহাড় , বনানী , সাগর , নদী । প্রাণের ছোঁয়ায় পৃথিবী জেগে উঠল। প্রভু উল্লসিত । মাটির বুকে সৃষ্টি করলেন নানা বন্য পশু, সরীসৃপ , টিকটিকি, গিরগিটি, পোকা মাকড়। ভরে উঠুক এই পৃথিবী ।

এত কিছুর পরেও কোথায় যেন একটি হাহাকার,নেই নেই ভাব। কে এই সুন্দর পৃথিবীর রক্ষনা বেক্ষন করবে! এখানে এমন কেউ ত নেই যে ঈশ্বর কে ভাল বাসবে,ঈশ্বরের সাথে কথা কইবে,তাকে স্মরণ করবে! ঈশ্বর যে একা !

ষষ্ঠ দিন । ঈশ্বর আবার তাঁর সৃষ্টি কর্মে মননিবেশ করলেন। একমুঠো ধুলো তুলে নিলেন,সৃষ্টি করলেন আদি মানুষ,ঠিক তাঁরই মত করে। নিখুঁত অবয়ব,সুঠাম দেহ । সে অন্য সবার থেকে আলাদা, অন্যরকম । সে হবে বিচক্ষণ , বুদ্ধিমান , ক্ষমতাশালী। ঈশ্বরের সঙ্গী হবে , ঈশ্বর কে ভাল বাসবে ,ডাকবে , কথা কইবে এই সুন্দর ধরণী কে আরও সুন্দর করে তুলবে । ষষ্ঠ দিন তাঁর সর্ব শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি ,মনুষ্য জাতি পৃথিবী কে উপহার দিলেন ঈশ্বর ।

টানা ছয় দিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর , সপ্তম দিন ধ্যানমগ্ন হলেন প্রভু,নিশ্চিন্ত হলেন । কেবল গভীর বিশ্রাম। এই সপ্তম দিনটি পবিত্র একটি দিন ,শান্তির দিন বিশ্রামের দিন ।

লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি -

জন্ম পশ্চিমবঙ্গ-র কুচবিহার শহরে। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। প্রথম কবিতার বই ' সুখের ঠিকানা', গল্প সংকলন 'চিরন্তন'। ইংরেজি কবিতার বই  'Bouuet of Poems'  বিভিন্ন পত্রিকায় লেখেন। বেশকিছু কিশোর সংকলনে গল্প প্রকাশিত হয়েছে। 

স্টেটস্‌ম্যান, সুখবর, সকালবেলা ইত্যাদি খবরের কাগজে গল্প প্রকাশিত হয়েছে।  দেশ,  সানন্দা, প্রসাদ, সারথি পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। 'Times of India'-তে বেশ কয়েকবার কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা দিয়ে সাহিত্য জীবনের শুরু।বর্তমানে কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য গল্প লিখতেই বেশি ভাল বাসেন ।  বহু e magazine এ লেখেন ।  

natun-bachhar-short-story-galpo-by-nandita-saha-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-নতুন-বছর-নন্দিতা-সাহা