ধারাবাহিক উপন্যাস – প্রতি বৃহস্পতিবার ।
পর্ব-- ৬১
--"Come
October, if I close my eyes,
A self
till then subliminal takes flight
Buzzing
round me, setting upon the knuckle,
The lip
to be explored not as in June
But with
a sense verging on micromania
Of
wrong,of tiny,hazy,crying wrongs
Which
quite undo her--
কিছু কিছু ফুল,এখনও ফুলেরই মতো;কিছু,কিছু
ভালোলাগা এখনও মনে ভালবাসার ম্যান্ডেলিন
বাজায়;কিছু কিছু হেমন্ত বিরচিত গোধূলি এখনও
শিল্পিত সুষমায় সেজে ওঠে। বাভ্রবির
মনটা এমনই জলতরঙ্গের মতো বেজে
উঠেছিল--ইন্ডিয়া হেবিটেট সেন্টার এ একটি
ফোয়ারার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বাভ্রবি। কিছুক্ষণ
আগেই ক্যসুরিনা হলে পোয়েট্রি
ক্লাব অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত একটি মাল্টি লিংঙ্গুয়াল পোয়েট্রি সেশন কাভার করছিল--। এতো ভাল লাগল। সবাই যে যার নিজের ভাষায় কবিতা পড়ছেন--শুরুতে
একটি ছোট সিনোপসিস। বাংলা,উর্দু,তামিল,ওড়িয়া,হিন্দি ,মালায়ালি---দারুণ ভাল লাগার
একটি অনুভূতি। বাংলা কবিদের মধ্যে দিল্লি হাটার্স এর দুজন একজন কবির কবিতাপাঠ
ও শুনল। সেশন শুরু হবার আগে ওদের চা,কফি পানের
সময় বেশ কয়েক জন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্র, ছাত্রীদের সাথে আলাপ হলো।
--"একচুয়্যালি
পোয়েট্রি ক্লাব ওব ইন্ডিয়ার একটি সেশন আছে ,যেখানে
ফার্স্ট পোয়েট্রি রিডিং,হয়--অর্থাৎ
উঠতি তরুণ কবিরা নিজেদের প্রথম কবিতা পাঠ
করে। আমরা সেই সেশনেই পারটিসিপেট করব--"
--"ওহ! ইটস
ওয়ান্ডারফুল।"
দারুণ একটা ভাল লাগার অনুভূতি নিয়ে বাইরে এলো
বাভ্রবি। তখনও ওদের সেশন চলছে। কিন্তু বাভ্রবিকে দিল্লির একজন তরুণ
চিত্র শিল্পীর প্রথম একজিবিশন
কাভার করতে হবে। ফোয়ারার জলের
বিন্দু বিন্দু ক্ষরিত ধারা জলের কিছুটা ছাট বাভ্রবির গায়ে এসে লাগছিল--এই শরতের রাতে সেই বিন্দুগুলোর স্পর্শ মন প্রাণ ভরে নিচ্ছিল বাভ্রবি।
গ্যালারির সামনে যেতে যেতে
বাভ্রবির মনে পড়ল রূপালীর বাড়িতে যাওয়া
হয়নি দুদিন। এইমস থেকে ওকে ছাড়ার আগে ওর জবানবন্দির সেশন টাও মনে পড়ল।
--"আপনি কেন
সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিলেন? জানেন এটা
একটা অপরাধ?"
রূপালী কোনও জবাব
দেয় নি। পুলিশ অফিসার নিজে একটু চুপ
করে থেকে আবার বলেছিলেন -
--"আপনার কি আপনার
husband এর
বিরুদ্ধে কোনও কমপ্লেন আছে?"
রূপালী এবার ও চুপ করে ছিল--।
--"আপনার হাজব্যান্ড
কি কোনও ভাবে আপনাকে শারীরিক, মানসিক টর্চার করছিলেন? যার
জন্য আপনি সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিলেন?"
--"প্লিজ,জবাব দিন।এভাবে চুপ
করে থাকবেন না। দেখুন,এমনি এমনি
কেউ সুইসাইড করার চেষ্টা করে না--"
রূপালীর চোখ থেকে এবার
জল গড়িয়ে পড়ল--
রূপালীর হার্ট
বীট বেড়ে যাচ্ছিল--এটেন্ডিং ডাক্তার
তাড়াতাড়ি অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে
পুলিশ অফিসার কে বলেছিলেন -
--"প্লিজ, অফিসার, এভাবে
প্রেসারাইজ করবেন না--সি ইজ নট
ওয়েল--"
অফিসার জবানবন্দী না নিয়েই ফিরে গিয়েছিলেন। আস্তে আস্তে রূপালীর রোগশয্যার পাশে --বাভ্রবি আর রঞ্জাবতী। রূপালী
সুস্থ অনেকটাই। ফ্রুট জুস খেয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে হাসল।
--"পলি,তুই--"রঞ্জাবতীর কথায় রূপালী ম্লান হাসল।
--"খুব বোকা,না বৌদি--?"তারপর দীর্ঘশ্বাস
ফেলে বলল--"তোমরা আমায় আবার
পুনর্জন্ম দিয়েছো। বিগত জীবন টাকে
আমি ভুলে যেতে চাই--"
--"জীবন
আমাদের একটাই রে। এতো সহজে এই জীবনটাকে শেষ করে দিস না। তোর কত কিছু
করার আছে--।"
--"ঠিক বলেছো!" তারপর বাভ্রবির
দিকে তাকিয়ে রূপালী বলেছিল
--"বৌদি,তুমি
আরেকবার ঐ পুলিশ অফিসার
কে ডেকে আনবে? আমি আমার স্টেটমেন্ট
দেবো।"
কি ছিল সেই গোপন জবানবন্দি? রূপালী ,পুলিশ অফিসার
আর একজন ডাক্তার ছাড়া কেউ জানে না। স্টেটমেন্ট নেবার
সময় নিয়ম মেনে সবাইকে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল।
একজিবিশন হলের সামনে আসতেই
চোখ ভরে গেল বাভ্রবির। ৩০ টি সম্পূর্ণ
মডার্ন এবং এবস্টার্ক্ট জল আর
তেল রঙের ছবি---। খুব সুন্দর, সাজানো--একটি
জলরঙের ছবির সামনে এসে বাভ্রবি দাঁড়িয়ে গেল। একটি যুদ্ধ
জাহাজ! গভীর সমুদ্রে টালমাটাল--গোলা,বারুদ কামানসহ ডুবে যাচ্ছে--ভেঙ্গে যাচ্ছে
শিকল---অসংখ্য মানুষের শিকল পরা হাত থেকে খসে পড়ছে লোহার শেকল --ছবির ক্যাপশন--ফ্রিডম! স্রষ্টার নাম--অতুল শর্মা। মুভি ক্যামেরার শাটারটি টেপার
জন্য ক্যামেরা হাতে নিতেই বাভ্রবির
মুঠোফোন বেজে উঠল
--"হ্যাঁ,যুধাজিত, বলো--"
--"স্যরি,স্যরি,আমি একদম
ভুলে গিয়েছিলাম--এখুনি আসছি--হ্যাঁ,হ্যাঁ,আই এম
জয়েনিং--।"
তাড়াতাড়ি কয়েকটি ছবি তুলে
বেসমেন্টের পার্কিং প্লেসের দিকে পা
বাড়ালো বাভ্রবি। সে ভুলেই গিয়েছিল, নেহেরু
প্লেসের ইস্কন মন্দিরের রেস্টুরেন্ট
এ আজ যুধাজিত আর বিনয়
গার্গের ছাত্রী বৈশালী একটি ডিনার পার্টিতে সেও আমন্ত্রিত। বৈশালীর ভাইবা হয়ে
গেছে--। সুতরাং- সে তার দুই সুপারভাইজার,তাদের
ফ্যামিলিসহ একটি ডিনার পার্টি থ্রো করছে।-প্রফেসর গার্গ পিওর শাকাহারী। ইস্কন ভক্ত। তাই বৈশালী ডিনার এখানেই
রেখেছে। গাড়ির ইঞ্জিন,এসি
স্টার্ট করে বাভ্রবি পার্কিং,লট থেকে
বেরিয়ে এক্সিট গেটের দিকে
এগোয়---ইন্ডিয়া হেবিট্যাট সেন্টার এর রঙিন ফোয়ারার দ্যৃতি
ছিটকে ছিটকে পড়ছে---
ক্রমশ …………
৬২তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার পরিচিতি
–
জন্ম-কলকাতায় । আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা ।
প্রকাশিত
গ্রন্থ
১--সাপ শিশির
খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)