Advt

Advt

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-60th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-60th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী


ধারাবাহিক উপন্যাস প্রতি বৃহস্পতিবার ।

পর্ব-- ৬০

Everything 's changed for the best-

How quivering  and fierce we were,

there snowbound together,

simmering like wasps

in our tent of books

বরফ--সাদা বরফের  পাহাড়! বরফের  পাহাড়ে স্কি করতে করতে হঠাৎই বরফের গুহার মধ্যেই  আটকে পড়েছে রূপালী। ঠাণ্ডা--এক হিমবাহ--শীতল এক গ্লেসিয়ার বুঝিবা ওর দেহ ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে---। এতো ঠাণ্ডার অনুভূতির  ভেতর হাত বাড়িয়ে সপ্তর্ষি কে ছুঁয়ে দেখার  চেষ্টা করল রূপালী--"সপ্তর্ষি--সপ্তর্ষি--।

--"ঋষি,ঋষি কোথায় তুমি? আমাকে এক শীতল  গ্লেসিয়ার  ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে--প্লিজ  আমার  হাতটা ধরো--"

--"সি ইজ টকিং--"সিস্টার রূপালীর  মুখের কাছে ঝুঁকে আস্তে ডাকলেন--"হ্যালো,ম্যাডাম, আভি ক্যায়সা ফিল হো রহা হ্যাঁয়?"

--"ঠাণ্ডা---কোল্ড--"

সিস্টার  ওর গায়ের চাদরটা আরেকটু টেনে দিয়ে বললেন--"গুড। সি ইজ রেসপন্ডিং--"দরজার বাইরে বেরিয়েই বাভ্রবিকে দেখে হাসলেন সিস্টার।

--"সি ইজ রেসপন্ডিং--"

বাভ্রবি তাড়াতাড়ি ভিজিটার্স লাউঞ্জের দিকে পা বাড়ালো;রঞ্জাবৌদি নিজে কিছুদিন আগে এতবড় অপারেশন থেকে উঠেছেন--তাই রঞ্জাবতীকে ওরা সবাই মিলে আগেই  বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। রঞ্জাবতী বারবার বাভ্রবির  হাত দুটি বরে বলেছিল--"পলির জ্ঞান  ফিরলে আমাকে জানাস রে বাবি--"

--"ঠিক আছে বৌদি--জানাবো--তুমি এবার গিয়ে বিশ্রাম নাও,লক্ষ্মীটি--তোমার  শরীর খারাপ  হয়ে,যাবে--।"

--"তুই জানাবি তো?"

--"হ্যাঁ, জানাবো।"

ফোনে ম্যাসেজ  টাইপ করে  ভিজিটার্স  লাউঞ্জের দিকে পা বাড়াতেই  দেখতে পেলো দুজন পুলিশ  অফিসার  সুজয়দার আর যুধাজিতের  সঙ্গে কথা বলছেন।

--"উই  হ্যাভ অলরেডি ব্যারিকেডেড  দ্য  হাউস।"

--:উই ওয়ান্ট  টু টক টু হার হাজব্যান্ড।"

--"বাট হি ইজ আউট অব দ্য  কান্ট্রি--"

--"ডাস নট  ম্যাটার--গিভ আস হিজ ফোন নাম্বার।"

ডেপুটি ডাইরেক্টার  মৃদু কণ্ঠে বললেন--"দে আর সেপারেটেড। দে ডোন্ট  লিভ টুগেদার--"

পুলিশ  অফিসার  এবার  একটু কঠিন  সুরেই বললেন--"ডাস নট ম্যাটার--হি ইজ স্টিল হার হ্যাজবেন্ড--। সি ওয়ান্টেড টু কিল হারসেল্ফ। সি মাস্ট বি গোয়িং থ্রু অ্যা রিয়েল ট্রমা--"

এবার ডেপুটি ডাইরেক্টার বললেন--"ইয়েস অফিসার, উই আর,গিভিং  হিজ ফুল ডিটেইলস।"

অফিসার  দুজন চলে যেতে যেতে বাভ্রবির  দিকে তাকিয়ে বললেন--"বাই দ্য  ওয়ে উই ওয়ান্ট  হার স্টেটমেন্ট  অলসো। সি --"

বাভ্রবি মাথা নেড়ে বলল--"সি ইজ আউট  অব ডেনজার;বাট স্টিল নট কেপেবল অব  গিভিং এনি স্টেটমেন্ট।"

--"ওকে,ওকে। উই উইল টক টু দ্য  ডক্টর--।"

বাভ্রবির  মুঠোফোন  বেজে উঠল-- রঞ্জা বৌদির ফোন।

--"হ্যালো,বৌদি,তুমি এখন ও শুতে যাও নি?"

--"শুয়েই আছি রে--ঘুম আসছিল  না--পলি কি এখন কথা--"

--"না বৌদি--এখনও  এলাউ করছে না--তবে সি ইজ আউট  অব ডেনজার।"

--"তুই-"

--"আমি ,আর দু একজন রিসার্চ  স্কলার  থাকছি--যুধাজিত,সুজয় দারা চলে যাবে--বেশি লোক এলাউ  করবে না--"

--"তুই  আজ সারাদিন ধরে এতো পরিশ্রম  করেছিস--"

ম্লান  হেসে জবাব  দিল  বাভ্রবি -

--"রূপালীকে এভাবে রেখে তো যেতে পারি না বৌদি। যুধাজিত বলছিল থাকবে,কিন্তু  প্রাকৃত  একা রয়েছে--একজনকে যেতেই  হবে--"

--"ইস আমিও তোর সঙ্গে থেকে গেলে পারতাম-"

--"তুমি ঘুমোও। আমার সাথে যুধাজিত-এর দুজন রিসার্চ স্কলার রয়েছে--সকাল সকাল আরও দুজন আসবে--আমরা বেরিয়ে পড়ব--"

--"কি আর বলব--সাবধানে থাকিস--সারারাত  তো বসেই থাকতে হবে--"

ফোন রেখে চুপ চাপ বারান্দার  খোলা জায়গায় দাঁড়াল  বাভ্রবি। ইমারজেন্সিতে কত কত ভয়াবহ  পেশেন্ট। একটি বাইক এক্সিডেন্ট এর পেশেন্ট। এক ঝলক সেই  রক্তাক্ত  শরীরের  দিকে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলো বাভ্রবি-। একটি ডেলিভারি বয়! রেস্টুরেন্ট  থেকে খাবারের পার্সেল  নির্ধারিত  সময়ের মধ্যে গ্রাহকের  কাছে পৌঁছে দেবার  তাড়ায় ওভারস্পীড করে এরা--লালবাতির  নিষেধ  মানে না--;পরিণতি--

পাশে দাঁড়িয়েছিল এস রামমূর্তি--সুদূর  কর্ণাটক  থেকে এখানে গবেষণা করতে এসেছে--আস্তে বলল

--"ম্যাডাম,এরা ওভার স্পীড  এজন্য ও করে--যত তাড়াতাড়ি পৌঁছে দেবে তত বেশি অর্ডার পাবে--তত বেশি ইনকাম!"

দীর্ঘশ্বাস  ফেলে বাভ্রবি--

--"ভেরি স্যাড।"

-"ম্যাম,আপনি কিছু খাবেন?"

-"ইচ্ছে করছে না--।"

--"ম্যাম,আমরাও খাবো--আই এম ব্রিংগিং  সামথিং ফর ইউ--"

ওরা দুজন বেরিয়ে গেলে বাভ্রবি আবার  নিজের ভাবনায় ডুবে গেল।এই  তো মানুষের  জীবন।যাকে ভালবেসে একটি মেয়ে ঘর বাঁধল--ছেলের জন্ম  দিল,ছেলের জন্য ,সংসারের  জন্য  হয়ত নিজের কত সাধ,আহ্লাদ  কে চেপে রাখল--তারা কেউ আজ ওর পাশে নেই--।

ভিজিটার্স  রুম দেখলে মনেই হয় না এতো রাত। হয়ত এই  আরোগ্য  নিকেতনে দিন রাত বলে কিছুই হয় না--শুধু সাইরেনের তীক্ষ্ণ  হুইসিল,এম্বুলেন্সের দরজা খোলা--পেশেন্টদের বের করে আনা--,রাবারসোল করিডোর --ঝাঁঝালো ওষুধের  গন্ধ---। ল্যাপটপ  খুলে কিছু কাজ করার চেষ্টা করবে বলে ল্যাপটপে হাত দিতেই  সিস্টার  আস্তে বললেন

--"ইউ ক্যান টক টু দ্য  পেশেন্ট। ইনফ্যাক্ট  য়ূ শুড টক টু হার--"

ল্যাপটপ  বন্ধ  করে তাড়াতাড়ি  বাভ্রবি বলল

--"ইজ শি--"

মাথা নেড়ে সিস্টার  বললেন

--"শি ইজ ওকে।বাট ইন অ্যা ট্রমা--"

ও পা বাড়াতেই  রামমূর্তি একটি গ্রীলড স্যান্ডউইচ  আর কফির প্লাস্টিক কাপ স্ট্র সমেত হাতে ধরিয়ে বলল--"ম্যাম,প্লিজ  খেয়ে নিন--"

-"থ্যাংকস "বলে খেতে  খেতেই  সিস্টার  এর সাথে পা বাড়ালো বাভ্রবি।

ক্রমশ …………

৬১তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার

লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি –        

জন্ম-কলকাতায়  আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা 

প্রকাশিত গ্রন্থ