Advt

Advt

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-58th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী

 ধারাবাহিক উপন্যাস প্রতি বৃহস্পতিবার ।

                    iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-58th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী


পর্ব-- ৫৮

And all these streets leading

so crosswise, honking, lengthily,

by avenues

stalked by high building  or crusted into slums

thru such halting traffic

screaming cars and engines

so painfully to this graveyard this stillness

On deathbed or mountain—

রাত না গভীর।বাভ্রবির  সামনে একটি বই খোলা--পড়ার  চেষ্টা করছে ,কিন্তু  কিছুতেই  মন দিতে পারছে না।ল্যাপটপ  বন্ধ  রেখেছে।এইমস এর ট্রমা সেন্টার  এর বাইরে ভিজিটার্স লাউঞ্জে বসেছিল  বাভ্রবি।সারাদিনের  ঘটনাবলী --একের পর এক ঘটে যাওয়া বিচিত্র  ঘটনা গুলি কে ঠিক  কোন পরম্পরায় সাজাবে--নিজের  কাছেই  সব যেন ঘেঁটে  যাচ্ছিল।মায়া কে নিয়ে  একটার  পর একটা হেলথ  সেন্টার, হাসপাতাল  ঘুরে অবশেষে  রাম মনোহর  লোহিয়া  হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ড ঘুরে শিশু বিভাগে মায়ার ছেলের  খোঁজ  মিলল।

--"হাঁ,এক বার্ন কেস ইহা এডমিট হুয়া হ্যাঁয়--"

বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে ,প্রেসের  কার্ড দেখিয়ে যখন বাচ্চাটির দেখা পাওয়া গেল--তখন মুখ ছাড়া  বাকি শরীরে ব্যান্ডেজ বাঁধা নিজের ছেলেকে দেখে স্তব্ধ  হয়ে দাঁড়িয়ে রইল  মায়া। ওর চোখের জল ও যেন শুকিয়ে গিয়েছিল। বাভ্রবি দেখেই  বুঝতে পারল এখানে এই  বাচ্চাটির বিশেষ কোনও  চিকিৎসা হয়নি। সিডেটিভ  দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে  রেখেছে।মায়া ছেলের আধপোড়া ছেলের পাশে বসে শূন্য  চোখে তাকালো--তারপর ওর মুখে,ঘুমন্ত  চোখের পাতায় চুমু খেতে লাগল--। বাভ্রবির  চোখে জল--।

এরা আসে,এরা শ্রম দেয়,এরাই  ইটের  পরে ইট তুলে কংক্রিট  জঙ্গল  বানায়,কাঁচ কাঁচ  কাঁচের  পরে কাঁচ  জুড়ে কাঁচ বাড়ি সাজায়, এরাই পরিখা পয়ো

প্রণালী সাফ করতে করতে কখনও  জলে ডুবে,কখনও  অগ্নিদগ্ধ  হয়ে মরে যায়--মৎস্যনারীর  যেমন পুত্র শোক হতে নেই  তেমনই  শ্রম দেয় যে নারী তার  ও পুত্র শোক,সন্তানশোক হতে নেই--;

-"আমি এক অভাগী নারী--"

শরৎবাবু তুমি অভাগীর স্বর্গ  বলে একটি গল্প  লিখেছিলে না?"

--:আমি এক অপয়া নারী।আমাকে জন্ম  দিয়ে আমার মা মরে গেল।"

-"আমার  বাপ আরেক মা নিয়ে এলো-"

আচ্ছা শরৎবাবু  তুমি কি মনে কর--আর্ট ইজ ওনলি ফর আর্টস সেক?

--"সেই  মা আমাকে দিয়ে খুব খাটাতো--"

--"আচ্ছা,রবি ঠাকুর, আপনি কি মনে করেন--আর্ট  ইজ ওনলি ফর আর্টস  সেইক?"

--"আপনার  দেনা পাওনা, ক্ষুধিত  পাষাণ--"

--"তারপর একদিন  আমার  সৎমায়ের  যন্ত্রণা  সহ্য করতে না পেরে আমি  আমার  গ্রামের  ই একটি ছেলে--সুরেশ--সেই সুরেশের সঙ্গে পালিয়ে এলাম--"

--"তুমি কি তাকে ভালবাসতে মায়া?"

--"ভালবাসা? প্যার? মহব্বত? "কেমন যেন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়েছিল মায়া--"

--"রূপালী--তুমি তো সপ্তর্ষিকে ভালবাসতে--"

রূপালী ও ঠিক  এরকমটাই  তাকিয়েছিল।

--"পতা নেঁহি।সায়েদ।মুঝে মেরি সতেলি মা-সে ছুটকারা চাহিয়ে থা--"

এই  এক জীবন থেকে অন্য একটি জীবনের  টান কে ই কি ভালবাসা বলে ভুল করে মানুষ--

--"ফির--"

পুরানা দিল্লি রেলস্টেশন  পে যব উতরা-তব মেঁ চক গয়ি--মাইয়া রে মাইয়া--কিতনি বড়ি টোউন হ্যায় দিল্লি--:

দিল্লির  জীবনে,এক জুগ্গি তে সুরেশ আর মায়ার জীবন বেশ ভাল ই চলছিল । দুবছরের মাথায় মাথায় একটি পুত্র সন্তান  কোলে এলো।সুরেশ কনষ্ট্রাকশন  সাইটে রাজমিস্ত্রির কাজ করত--বেশ ভাল ভাবেই  চলছিল।

তারপর--

একদিন দুপুরে --ঝড় থেমে যাওয়া গাড় অন্ধকার  দুপুরে--ছেলের বয়স দুবছর--ভাত ঘুমে ছেলে কে নিয়ে আচ্ছন্ন  মায়ার কাছে খবর এলো উপর থেকে কাজ করার  সময় পড়ে গেছে সুরেশ--গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে--।ছেলেকে পড়শি র কাছে রেখে ছুটে গিয়ে ও শেষ দেখা দেখতে পেল না মায়া।

"আমি এক অভাগী নারী--যৌবনে স্বামীকে খেলাম। আমার  মুখ দেখাও পাপ।"

বাভ্রবি বুঝতে পারল এখানে এই অবস্থায় পড়ে থাকলে মায়ার ছেলেকে বাঁচানো যাবে না। ডাক্তারের  সঙ্গে নিজের প্রেস কার্ড দেখিয়ে দেখা করে বুঝতে পারল ও ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে -তবে ইন্টারনাল কোনও  বিশেষ ইনজুরি নেই। সফদরজং  বার্ন ইউনিটে শিফট করলে বাচ্চাটি হয়ত বেঁচে যেতে পারে--।

সফদরজং  বার্ন  ইউনিটে অনেক  কাঠখড় পুড়িয়ে বাভ্রবি যখন বাড়ি পৌঁছল-তখন সন্ধে মিলিয়ে গিয়েছিলাম রাত নেমেছে।ক্লান্ত  বাভ্রবির  চোখে মা মায়ার সেই  কৃতজ্ঞ  ,ছলছল চোখ ভেসে উঠল--সেই  চোখ ওর সারাদিনের  ক্লান্তি  কে মুছে দিল।ল্যাপটপ  স্টাডি টেবিলে  রাখতেই  প্রাকৃত  একগ্লাস  জল নিয়ে এসে দাঁড়াল -

--"মম,ইউ আর লুকিং ভেরি ভেরি টায়ার্ড।"

গ্লাসটা হাতে নিয়ে  প্রাকৃতের  চুলগুলো কে এলোমেলো করে দিয়ে  বলল

--"থাঙ্কু মাই সান--"ঢক ঢক করে জলটা খেয়ে নিয়ে  বলল--"আহ্। দারুণ  তেষ্টা পেয়েছিল রে--"

--"বেড নাম্বার-৩০--এনি এটেনডেন্ট--"

বাভ্রবির চিন্তার জাল ছিন্ন--। তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়ে বলল--"ইয়েস! ইয়েস সিসটার--"শঙ্কিত কণ্ঠস্বর  শুনে সিসটার  মৃদু হেসে বললেন--"চিন্তার  কোনও  কারণ নেই--পেশেন্টের  জ্ঞান ফিরেছে। সি ইজ  স্টেবল। আপনি ওনার  কে হন?"

ইতস্তত  করে জবাব  দিল--"নেবার--ক্লোজ ফ্রেন্ড--"

--"উনার  হাজব্যান্ড--"

বাভ্রবি মাথা নিচু করে জবাব  দিল--"দে আর সেপারেটেড!"

--ওহ্।

--:আমি কি রূপালী--মানে পেশেন্টের  সঙ্গে দেখা করতে পারি?"

--"নো। নট নাউ--কয়েকটি মেডিসিন লাগবে--"

--"ওকে।" প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে পা বাড়াতেই  দেখল যুধাজিত, সুজয় দার  সাথে আরো কয়েকজন---। চোখ খুঁজল সপ্তর্ষিকে---না--নেই—

ক্রমশ …………

৫৯তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার

লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি –        

জন্ম-কলকাতায়  আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা 

প্রকাশিত গ্রন্থ

১--সাপ শিশির খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)