Advt

Advt

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-56th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী

 ধারাবাহিক উপন্যাস প্রতি বৃহস্পতিবার ।

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-56th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী

পর্ব-- ৫৬

And I am aware of my heart:it opens  and closes

Its bowl of red blooms out of sheer love of me.

The water I taste is warm and salt,like the sea,

And comes from a country  far away as health.

নোনা জল ;মিঠে মিঠে বালুতট, নরম স্পর্শ।তানিয়া কি নোনাজল গিলে গিলে মৎস্য নারীদের মত পাতাল পুরীতে পৌঁছে গিয়েছিল--এক সুন্দর  ঠাণ্ডা--পরিখা ঘেরা পাতালপুরী--।সেখানে এক মৎস্য পুরুষ ওর মুখে ফুঁ দিচ্ছিল  --ওর নাভি মূলে চাপ দিয়ে ওর পেটের  ভেতরের  জমে থাকা জল বের করার  চেষ্টা করছিল--খোলা আকাশের  নীচে উজ্জ্বল  সূর্যের  প্রতিভাত  আলোয় তানিয়ার  চোখে চোখ পড়েছিল ঐ মৎস্য  পুরুষের।কিছুক্ষণ  অবাক বিস্ময়;তারপর ই  ধড়মড়িয়ে উঠে বসার  চেষ্টা করতেই  পুরুষটি তানিয়াকে সস্নেহে--হ্যাঁ,তানিয়ার  তখন ঠিক  এরকমটাই মনে হচ্ছিল--সস্নেহে  শুইয়ে  দিয়ে, খুব নরম গলায় বলেছিল

--"রিলাক্স ম্যাডাম!হাউ আর ইউ ফিলিং নাও?"

তখনই  তানিয়ার  চোখে পড়েছিল ওর আশেপাশে আরও কয়েক টি উৎকণ্ঠিত মুখ!ওর স্কুলের  কয়েক টি ছাত্র, ছাত্রী,একজন,শিক্ষিকা--।

--"ম্যাম,আর ইউ ওকে ?"

--"তানি--ইউ আর ফিলিং বেটার ?শ্যাল উই টেক হার টু এ হেলথ  সেন্টার?"

বৈভব, সেই  মৎস্য  পুরুষের  নাম বৈভব--ওর একজন কলিগ বা বন্ধু ওকে এই নামেই  ডাকছিল--বৈভব  তখন খুবই মৃদু সুরে বলেছিল

--"আই ডোন্ট  থিংক ইট ইজ রিকোয়ারড--বাট,ইফ ইউ ফিল,ইউ কেন টেক হার আফটারওয়ারডস--নাও শি সুড টেক  সাম রেস্ট।টেক হার টু দ্য  হোটেল--"

কথাগুলো মুখোমুখি হচ্ছিল।তানিয়া আর বাভ্রবি--দুজনেই  কনট প্লেসের  একটি রেঁস্তোরায় বসেছিল।

--"তোমাকে সেই  দিল্লিতে আসতেই হলো,তানিয়া--"

একটি বড় দীর্ঘশ্বাস  ফেলে তানিয়া বলল

--"হ্যাঁ দি,কিভাবে আসব ভেবেছিলাম, আর কিভাবে এলাম।"

--"সেই!"

আপনার মনে,যেন নিজেকেই  নিজে বলছে--সেভাবেই  তানিয়া বলল

--"দুজনের  কত স্বপ্ন  ছিল--কিভাবে, ঘর সাজাবো।বৈভব  আমাকে ওর পুরো ঘরের  ছবি পাঠিয়েছিল--।আমাদের  দুজনের  বিয়ের ছবি কোথায়,কোন সাইড টেবিলে রাখব--।"বলতে বলতে ম্লান  হাসল তানিয়া।

--"আমরা,মেয়েরা  কি বোকা--তাই না দি?কত তুচ্ছ  ঘটনা নিয়ে আমরা তাসের প্রাসাদ গড়ে তুলি।"

--"ম্যাডাম, এনি থিং এলস"?

লাঞ্চের এঁটো  থালা গুলো সরিয়ে নিতে নিতে ওয়েটার হেসে জিজ্ঞেস  করল।

--:,হাঁ,ইয়েস--তানিয়া,তুমি কি আইসক্রিম  বা মিষ্টি খাবে?"

তানিয়া মাথা নেড়ে বলল--"না।কফি--কোল্ড  কফি খেতে পারি--"

--"ওকে।টু কোল্ড  কফি প্লিজ--"

ওয়াটার  চলে গেলে আবার  মুখোমুখি।

--"তানিয়া,তুমি কি একা এসেছে?"

--"না দি,আমার মা বাবা ও সঙ্গে এসেছেন।"

বাভ্রবি ব্যস্ত  গলায় বলল

--:আরে তাহলে তাঁদের  কেও ডেকে নিলেন হতো--আগে বলো নি কেন?"

তানিয়া একটু হেসে বলল

--"দিদি,ব্যস্ত  হবার  কিছু নেই।আজ আমি ইচ্ছে করেই  তোমার  সঙ্গে একা দেখা করেছি।আমার  মা,বাবা তোমার  সঙ্গে দেখা না করে দিল্লি ছাড়বেন  না।--ওরা যে তোমার  কাছে ঋণ বদ্ধ।"

--"ইস--কি যে বলো তানিয়া--ওরকম  বলো না---আমি কি আর এমন করেছি--"

তানিয়া চুপ করে থেকে বলল--"দি,তুমি সেদিন  না থাকলে আমি মরে যেতাম!"

আফতাব  আনসারির  কথা মনে পড়ল বাভ্রবির।

--"ম্যাডাম, নিজের  নিজের  কর্তব্য  টুকু যদি এই  ভারতবর্ষের  সবাই ঠিক মত করতেন--তাহলে যে এদেশ সোনার  দেশ হয়ে যেতো!"

কোল্ড কফির কাপে চুমুক  দিয়ে বাভ্রবি ব্রিটিশদের  তৈরি এই  কনট সার্কাস--কনট প্লেসের দিকে তাকালো।তানিয়ার একটি ফোন এলো--তানিয়া কথা বলায় ব্যস্ত।

১৯১১ সালে দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তরিত  হবার  পর একটু একটু করে গড়ে উঠেছে এই  নয়াদিল্লি।ভাইসরয় প্রাসাদ,রাজপথ,গোল ডাকখানা--কনটপ্লেস।যাযাবর  রচিত  -"দৃষ্টিপাত "মনে পড়ল বাভ্রবির।কালীবাড়ি,বিড়লা,মন্দির--এই  রাস্তার  নাম করণ --"মন্দির  মার্গ"নিয়ে সুন্দর  মন্তব্য!ঠোঁটের  কোণে মৃদু হাসি ফুটে উঠল বাভ্রবির।সত্যিই  সাহিত্য  স্রষ্টারা কি দিব্য দ্রষ্টা হোন?

রেস্টুরেন্ট  এর দোতলা থেকে রাস্তার  মানুষ, গোল খাম্বা--পার্কিং লটে গাড়ির  পর গাড়ি--;

-রেঁস্তোরা র এলোমেলো সংলাপ;

--"আচ্ছা,তো,তুম লোগ ছুট্টি মানানে  মানালি যা রহেঁ?"

--"হাঁ ইয়ার।"

--"খুদ ড্রাইভ  করকে?"--"

--"দিস ইজ নট ফেয়ার  জানু--ইউ সুড  টেল ইয়োর মম--সি,ইয়োর ড্যাড স ফ্ল্যাট  ইজ নট দ্যাট বিগ--উই নিড সাম প্রাইভেসি--"

বাভ্রবির  দৃষ্টি এবার  বড় বড় কাঁচের জানালা,দরজায় আটকে যায়;শীতের  দেশের এই  কাচ ঘেরা ঘর,ফ্রেঞ্চ  উইন্ডোজ--আমাদের  এই  গ্রীষ্মপ্রধান  দেশে কোন প্রয়োজন?আমাদের  এমনিতে  অবারিত  সূর্যালোক।ভৌগলিক  নিয়ম মেনে পোশাক, আশাক, বাসস্থান-সিটি প্ল্যানার রা এই  সাধারণ  কথাগুলো মনের রাখেন  না কেন?

--:glass has no soul!

তবু নাগরিক  আকাশ  আজও  ঢেকে যায় কাঁচ  দম্ভে!কাঁচের বাসস্থান  অভ্রংলিহ  অহংকারে প্রদূষিত  করে প্রকৃতির  রূপটান, ঘরবসত--কোল্ড  কফি ,দুপুর  এবং,বিকেলের  সঙ্গমস্থলে  দাঁড়িয়ে বাভ্রবি এবং –

ক্রমশ …………

৫৭তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার

লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি –        

জন্ম-কলকাতায়  আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা 

প্রকাশিত গ্রন্থ

১--সাপ শিশির খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)