ধারাবাহিক উপন্যাস – প্রতি বৃহস্পতিবার ।
And I am
aware of my heart:it opens and closes
Its bowl
of red blooms out of sheer love of me.
The water
I taste is warm and salt,like the sea,
And comes
from a country far away as health.
নোনা জল ;মিঠে মিঠে
বালুতট, নরম স্পর্শ।তানিয়া কি নোনাজল গিলে গিলে মৎস্য নারীদের মত পাতাল পুরীতে
পৌঁছে গিয়েছিল--এক সুন্দর ঠাণ্ডা--পরিখা
ঘেরা পাতালপুরী--।সেখানে এক মৎস্য পুরুষ ওর মুখে ফুঁ দিচ্ছিল --ওর নাভি মূলে চাপ দিয়ে ওর পেটের ভেতরের
জমে থাকা জল বের করার চেষ্টা
করছিল--খোলা আকাশের নীচে উজ্জ্বল সূর্যের
প্রতিভাত আলোয় তানিয়ার চোখে চোখ পড়েছিল ঐ মৎস্য পুরুষের।কিছুক্ষণ অবাক বিস্ময়;তারপর
ই ধড়মড়িয়ে উঠে বসার চেষ্টা করতেই
পুরুষটি তানিয়াকে সস্নেহে--হ্যাঁ,তানিয়ার তখন ঠিক
এরকমটাই মনে হচ্ছিল--সস্নেহে
শুইয়ে দিয়ে, খুব নরম
গলায় বলেছিল
--"রিলাক্স
ম্যাডাম!হাউ আর ইউ ফিলিং নাও?"
তখনই তানিয়ার
চোখে পড়েছিল ওর আশেপাশে আরও কয়েক টি উৎকণ্ঠিত মুখ!ওর স্কুলের কয়েক টি ছাত্র, ছাত্রী,একজন,শিক্ষিকা--।
--"ম্যাম,আর ইউ ওকে
?"
--"তানি--ইউ
আর ফিলিং বেটার ?শ্যাল উই টেক হার টু এ
হেলথ সেন্টার?"
বৈভব, সেই মৎস্য
পুরুষের নাম বৈভব--ওর একজন কলিগ বা
বন্ধু ওকে এই নামেই ডাকছিল--বৈভব তখন খুবই মৃদু সুরে বলেছিল
--"আই
ডোন্ট থিংক ইট ইজ রিকোয়ারড--বাট,ইফ ইউ ফিল,ইউ কেন
টেক হার আফটারওয়ারডস--নাও শি সুড টেক সাম
রেস্ট।টেক হার টু দ্য হোটেল--"
কথাগুলো মুখোমুখি
হচ্ছিল।তানিয়া আর বাভ্রবি--দুজনেই কনট
প্লেসের একটি রেঁস্তোরায় বসেছিল।
--"তোমাকে
সেই দিল্লিতে আসতেই হলো,তানিয়া--"
একটি বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে তানিয়া বলল
--"হ্যাঁ দি,কিভাবে
আসব ভেবেছিলাম, আর কিভাবে এলাম।"
--"সেই!"
আপনার মনে,যেন
নিজেকেই নিজে বলছে--সেভাবেই তানিয়া বলল
--"দুজনের কত স্বপ্ন
ছিল--কিভাবে, ঘর সাজাবো।বৈভব আমাকে ওর পুরো ঘরের ছবি পাঠিয়েছিল--।আমাদের দুজনের
বিয়ের ছবি কোথায়,কোন সাইড টেবিলে
রাখব--।"বলতে বলতে ম্লান হাসল
তানিয়া।
--"আমরা,মেয়েরা কি বোকা--তাই না দি?কত
তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে আমরা তাসের প্রাসাদ গড়ে
তুলি।"
--"ম্যাডাম, এনি থিং
এলস"?
লাঞ্চের এঁটো থালা গুলো সরিয়ে নিতে নিতে ওয়েটার হেসে
জিজ্ঞেস করল।
--:,হাঁ,ইয়েস--তানিয়া,তুমি কি
আইসক্রিম বা মিষ্টি খাবে?"
তানিয়া মাথা নেড়ে
বলল--"না।কফি--কোল্ড কফি খেতে
পারি--"
--"ওকে।টু
কোল্ড কফি প্লিজ--"
ওয়াটার চলে গেলে আবার
মুখোমুখি।
--"তানিয়া,তুমি কি
একা এসেছে?"
--"না দি,আমার মা
বাবা ও সঙ্গে এসেছেন।"
বাভ্রবি ব্যস্ত গলায় বলল
--:আরে তাহলে
তাঁদের কেও ডেকে নিলেন হতো--আগে বলো নি
কেন?"
তানিয়া একটু হেসে বলল
--"দিদি,ব্যস্ত হবার
কিছু নেই।আজ আমি ইচ্ছে করেই
তোমার সঙ্গে একা দেখা করেছি।আমার মা,বাবা
তোমার সঙ্গে দেখা না করে দিল্লি
ছাড়বেন না।--ওরা যে তোমার কাছে ঋণ বদ্ধ।"
--"ইস--কি যে
বলো তানিয়া--ওরকম বলো না---আমি কি আর এমন
করেছি--"
তানিয়া চুপ করে থেকে বলল--"দি,তুমি
সেদিন না থাকলে আমি মরে যেতাম!"
আফতাব আনসারির
কথা মনে পড়ল বাভ্রবির।
--"ম্যাডাম, নিজের নিজের
কর্তব্য টুকু যদি এই ভারতবর্ষের
সবাই ঠিক মত করতেন--তাহলে যে এদেশ সোনার
দেশ হয়ে যেতো!"
কোল্ড কফির কাপে চুমুক দিয়ে বাভ্রবি ব্রিটিশদের তৈরি এই
কনট সার্কাস--কনট প্লেসের দিকে তাকালো।তানিয়ার একটি ফোন এলো--তানিয়া কথা
বলায় ব্যস্ত।
১৯১১ সালে দিল্লিতে রাজধানী
স্থানান্তরিত হবার পর একটু একটু করে গড়ে উঠেছে এই নয়াদিল্লি।ভাইসরয় প্রাসাদ,রাজপথ,গোল
ডাকখানা--কনটপ্লেস।যাযাবর রচিত -"দৃষ্টিপাত "মনে পড়ল
বাভ্রবির।কালীবাড়ি,বিড়লা,মন্দির--এই রাস্তার
নাম করণ --"মন্দির
মার্গ"নিয়ে সুন্দর
মন্তব্য!ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি
ফুটে উঠল বাভ্রবির।সত্যিই সাহিত্য স্রষ্টারা কি দিব্য দ্রষ্টা হোন?
রেস্টুরেন্ট এর দোতলা থেকে রাস্তার মানুষ, গোল
খাম্বা--পার্কিং লটে গাড়ির পর গাড়ি--;
-রেঁস্তোরা
র এলোমেলো সংলাপ;
--"আচ্ছা,তো,তুম লোগ
ছুট্টি মানানে মানালি যা রহেঁ?"
--"হাঁ
ইয়ার।"
--"খুদ
ড্রাইভ করকে?"--"
--"দিস ইজ নট
ফেয়ার জানু--ইউ সুড টেল ইয়োর মম--সি,ইয়োর
ড্যাড স ফ্ল্যাট ইজ নট দ্যাট বিগ--উই নিড
সাম প্রাইভেসি--"
বাভ্রবির দৃষ্টি এবার
বড় বড় কাঁচের জানালা,দরজায়
আটকে যায়;শীতের
দেশের এই কাচ ঘেরা ঘর,ফ্রেঞ্চ উইন্ডোজ--আমাদের এই
গ্রীষ্মপ্রধান দেশে কোন প্রয়োজন?আমাদের এমনিতে
অবারিত সূর্যালোক।ভৌগলিক নিয়ম মেনে পোশাক, আশাক, বাসস্থান-সিটি
প্ল্যানার রা এই সাধারণ কথাগুলো মনের রাখেন না কেন?
--:glass has no soul!
তবু নাগরিক আকাশ
আজও ঢেকে যায় কাঁচ দম্ভে!কাঁচের বাসস্থান অভ্রংলিহ
অহংকারে প্রদূষিত করে
প্রকৃতির রূপটান, ঘরবসত--কোল্ড কফি ,দুপুর এবং,বিকেলের সঙ্গমস্থলে
দাঁড়িয়ে বাভ্রবি এবং –
ক্রমশ …………
৫৭তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার পরিচিতি
–
জন্ম-কলকাতায় । আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা ।
প্রকাশিত
গ্রন্থ
১--সাপ শিশির
খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)