পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার শিবমন্দিরগুলির মধ্যে বা
শৈবতীর্থের মধ্যে অন্যতম প্রসিদ্ধ মন্দির এই এক্তেশ্বর শিবমন্দির। অনেকেরই বক্তব্য,বিষ্ণুপুরের
রাজা এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। আবার কিংবদন্তী আছে,অতীতকালে
মল্লভূম ও সামন্তভূমের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি বলে স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেব
এই সমস্যার সমাধান করেন,এই কারণে দুই রাজ্যের সীমানায়
প্রতিষ্ঠিত হয় একতা-সম্পাদনকারী একতেশ্বর বা এক্তেশ্বর মন্দির।
আবার আচার্য যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধির মতে,এখানকার
শিবলিঙ্গটি নাকি অনেকটাই মানুষের পায়ের মতো,তা থেকে তাঁর অনুমান,বেদে উল্লিখিত একপাদেশ্বর-এর প্রতীক এটি, পরবর্তীকালে
মানুষের মুখে মুখে এই নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে এক্তেশ্বর। এছাড়াও ল্যাটেরাইটে নির্মিত এই
মন্দিরে পরবর্তীকালে বেলেপাথর ও ইটের কাজ করা হয়।
এটি এই জেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ শিবমন্দির।
পশ্চিমামুখী,পাথরের তৈরি এই মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ১৩.৭ মিটার বা প্রায় ৪৫ ফুট।
দৈর্ঘ্য ৮.৬ মিটার বা প্রায় ২৮ ফুট ৪ ইঞ্চি, প্রস্থে প্রায়
৮.৩ মিটার বা প্রায় ২৭ ফুট ৪ ইঞ্চি।
এক্তেশ্বর মন্দিরে শিবের একটি একপদ মূর্তি পূজিত হয়। এই ধরনের শিবমূর্তি অন্য কোনও শিবমন্দিরে সাধারণত দেখা যায় না। চৈত্র সংক্রান্তির সময় গাজনের মেলা উপলক্ষে এখানে প্রচুর সংখ্যায় ভক্ত সমাগম হয়। তখন এখানে বিরাট মেলা বসে।
কলকাতা থেকে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস সহ একাধিক ট্রেন যাচ্ছে
বাঁকুড়া। বাস যাচ্ছে ধর্মতলার শহিদ মিনার বাসস্ট্যান্ড থেকে। বাঁকুড়া শহর থেকে
সামান্য দূরে এই এক্তেশ্বর শিবমন্দির।
এখানে থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন দাম ও মানের হোটেল। এগুলির মধ্যে সুবিধামতো কোনও একটি বেছে নিয়ে রাত্রিবাস করাই যায়।
লেখক পরিচিতি -
জন্ম,বেড়ে ওঠা,শিক্ষা কলকাতায়।
সুদীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে ভ্রমণ সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু আদ্যোপ্রান্ত বোহেমিয়ান। সারা জীবন জড়িয়ে থেকেছেন 'বর্তমান পরিবারের'সঙ্গে। সাপ্তাহিক বর্তমান সহ শরীর ও স্বাস্থ্য, সুখী গৃহকোণ,আজকাল বিভিন্ন পত্রিকায় লিখেছেন। বিশেষ করে সাপ্তাহিক বর্তমানের অত্যন্ত জনপ্রিয় পুজোর ভ্রমণ বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে লিখেছেন। এই লেখার জন্য তাঁকে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন মন্দির কেন্দ্র এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে। তারই ফলশ্রুতি এই বই। এতদিনের ভ্রমণ অভিজ্ঞ তার ফসল।
ছবি - সংশ্লিস্ট সংস্থার সৌজন্যে