ধারাবাহিক – প্রতি সোম, বুধ এবং শুক্রবার
পর্ব – ১৫
হ্যাঁ,এই মহাতীর্থের প্রাঙ্গণে
মানুষের মনে সাধু সন্তদের দর্শন করার সুপ্ত ইচ্ছা পূর্বে যেমন ছিল, আজ সেই ইচ্ছা আরও তীব্র হয়েছে তার কারণ
বর্তমান সময়ের ভারতবর্ষের সামাজিক প্রেক্ষাপটের এক বিরাট পরিবর্তন। পাশ্চাত্যের
প্রতি মানুষের অন্ধ আকর্ষণ পূর্বেও যে ছিলনা তা নয়। কিন্তু আজ যেনো সেই
পাশ্চাত্যের প্রতি আকর্ষণ অন্ধ ভক্তির পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। যেন তেন প্রকারে সে
পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ করতে চাইছে। অনুসরণ ও অনুকরণ কিন্তু এক নয়। অনুসরণ করতে
কোনো দোষ নেই। যা কিছু ভালো তাকে গ্রহণ করতে স্বামীজীও বলেছেন...” নির্ভীক হইয়া
সর্বদ্বার উন্মুক্ত করিতে হইবে। আসুক চারিদিক হইতে রশ্মিধারা, আসুক তীব্র পাশ্চাত্যকিরণ। যাহা দুর্বল
দোষযুক্ত,তাহা মরণশীল - তাহা লইয়াই
বা কি হইবে? যাহা বীর্যবান বলপ্রদ,তাহা অবি নশ্বর - তাহার নাশ কে করে ?” আবার স্বামীজীকেই দেখেছি অন্ধ পাশ্চাত্যের
অনুকরণের বিরুদ্ধে খড়গ হস্ত হতে। কারণ তিনি যেমন নিজের দেশ ভারতবর্ষকে
ভালোবেসেছিলেন তেমনই পাশ্চাত্যকেও।
স্বামী বিবেকানন্দ ও পাশ্চাত্য জগৎ প্রবন্ধে প্রব্রাজিকা ব্রজপ্রাণা
লিখেছেন…
“মানুষের মহত্তম আশা
-আকাঙ্ক্ষা এবং পশুবত আচরণের মধ্যে এমন বিভাজন আমেরিকার মতো আর কোনও দেশে এত প্রকট
নয়। টি.ভি.-র মাধ্যমে পৃথিবীর দুঃখ দুর্দশা এবং সভ্যতার অবনতির কথা এখানে
প্রতিগৃহে এসে পৌঁছয়। আর তার চেয়েও ভয়াবহ হল প্রতিটি গৃহই এখন এক গভীর সংকটের
মধ্যে রয়েছে। পাশ্চাত্যের পরিবারগুলি যেন গিরি চূড়ার শেষপ্রান্তে এসে
দাঁড়িয়েছে; এদের টিকে থাকা নিয়েই আজ
প্রশ্ন উঠেছে। পরিবারগুলি ধীরে ধীরে ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে সামগ্রিক ভাবে পাশ্চাত্যের
সমাজও টুকরো টুকরো ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ফলে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়াবহ অপরাধের
সংখ্যা, মানসিক রোগের চিকিৎসকদের
চেম্বারে রোগীর ভিড়। সুদৃঢ় পারিবারিক বন্ধনের অভাবে এক ধরনের নৈতিক শূন্যতার
সৃষ্টি হয়েছে এবং শিল্পোন্নয়নের পরবর্তী কালের পাশ্চাত্য সমাজে তা আরও প্রকট
হয়ে উঠেছে। এসবই
পাশ্চাত্য
জগতের অধোগতির কথা।
আমরা
যদি জানালা খুলে কেবল অন্ধকারই দেখি তাহলে দৃশ্যটি নিঃসন্দেহে খুবই ভয়াবহ। তথাপি
পাশ্চাত্য ভূখণ্ডের উপর স্বামীজীর গভীর আস্থা ছিল। তিনি পাশ্চাত্য কে ভালবাসলেন
হৃদয় দিয়ে।”
স্বামীজীর
শারীরিক রূপে ভাঙন সেখানেই ধরলো; একের পর এক বক্তৃতা দিতে দিতে তিনি ভ্রুক্ষেপ করলেননা নিজের
শরীরের প্রতি। তাঁর প্রতিটি বক্তৃতায় ভারতবর্ষ ও ভারতবর্ষের মানুষ, কিট,পতঙ্গ, আবহাওয়া কি নেই সেখানে !
পাশ্চাত্যের ভূমিতে তিনি ভারতবর্ষের বেদান্তের বীজ বপন করলেন। পাশ্চাত্য
ভারতবর্ষকে জানলো। বস্তুত বিবেকান্দের জীবনে ‘ ঈশ্বর এবং ভারতবর্ষ ’ সমার্থক হয়ে
উঠলো। একটি দেশে এবং তার মধ্যে নিবাস করা সমস্ত মানুষ জন থেকে নিয়ে জড় - অজড়
সমস্ত কিছুই ঈশ্বর রূপে মিশে গেলো স্বামীজীর চেতনার মধ্যে।
…ওরে মাটি, তুই আমারে কি চাস।
মোর তরে জল দু হাত বাড়াস?
নিশ্বাসে বুকে পশিয়া বাতাস
চির-আহ্বান আনিছে।
পর ভাবি যারে তারা বারে বারে
সবাই আমারে টানিছে।
…আছে আছে প্রেম ধুলায় ধুলায়,
আনন্দ আছে নিখিলে।
এ কথা না যদি শিখিলে
...জীবনে মরণে ভয়ে ভয়ে তবে
প্রবাসী ফিরিবে নিখিলে...
প্রয়াগ
মহাকুম্ভের অমৃত কথার বৃত্তান্ত লিখতে বসে আমি আমার পাঠক যাঁরা আমার ভগবান তাদের
কি আমি বিভ্রান্ত করছি ?
না
একদমই নয়। পূর্বেইপৌর পৌরাণিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে আমি এই মহাকুম্ভের বৃত্তান্ত
ব্যাখ্যা যেমন করেছি তেমনই দেহতত্ত্বের দ্বারাও কুম্ভকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা
করেছি। কিন্তু প্রয়াগের এই মহাকুম্ভ এবং অন্য তিনটি স্থানের কুম্ভ যা নদীরধারে
যুগ যুগান্তর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে সবই তো মানুষের দ্বারা মানুষের জন্য। সেই
পরিপ্রেক্ষিতে আমার এই কুম্ভ অন্বেষণ অগণন মানুষের অন্বেষণ । আর রবীন্দ্রনাথ এই
নগরেই এই কুম্ভ অঞ্চল থেকে মাত্র অনতি দূরে বসে লিখেছেন ১৪টি কালজয়ী কবিতা ও
সঙ্গীত; যা প্রেম,পূজা, প্রকৃতির মধ্যেই নিহিত ত্যাগ,তিতিক্ষা ও ত্যাগের পরাকাষ্ঠা। ব্রাহ্ম
রবীন্দ্রনাথ,উপনিষদের সেই বর্ণিত ঋষি
সম রবীন্দ্রনাথ পিয়ারিলাল বন্দোপাধ্যায়ের বাড়িতে বসে লিখছেন-
…হে বিরাট নদী, অদৃশ্য নিঃশব্দ তব জল
অবিচ্ছিন্ন অবিরল চলে নিরবধি।...
তাঁর
মানস চক্ষে প্রতিভাত এই মহাকুম্ভের প্রধান চালিকা পুত পবিত্র গঙ্গা। তারও পূর্বে
তিনি এখানেই বসে লিখছেন ....
অন্ধকারের উৎস-হতে উৎসারিত আলো
সেই তো তোমার আলো!
সকল দ্বন্দ্ববিরোধ-মাঝে জাগ্রত যে ভালো
সেই তো তোমার ভালো ॥
পথের ধুলায় বক্ষ পেতে রয়েছে যেই গেহ
সেই তো তোমার গেহ।
বিশ্বজনের পায়ের তলে ধূলিময় যে ভূমি
সেই তো স্বর্গভূমি।
সবায় নিয়ে সবার মাঝে লুকিয়ে আছ তুমি
সেই তো আমার তুমি ॥
মাটির
কি কোনো সীমা রেখা হয় ! এই ধুলা-মাটির মধ্যে কোনো ভেদ নেই, বিভেদও নেই। এই ধুলা মাটি রবীন্দ্রনাথের কাছে
স্বর্গ ভূমি।
ধন্য
এই নগরীর ধুলা মাটি যেখানে উপবিষ্ট হয়ে তিনি এই ধুলা মাটিকে উপলব্ধি করে, তিনি বলছেন ‘ স্বর্গভূমি ’। নিঃসন্দেহে তিনি
এখানে প্রতিটি মানুষের মধ্যে উপলব্ধি করেছেন সেই পরম সত্বাকে। যেই পরম সত্ত্বার
খোঁজেই এই ত্রিবেণী সঙ্গমের কিনারে অগণন মানুষের আগমন… ‘ মোক্ষের প্রাপ্তি অমৃত্যের
পুণ্যস্নান ’। আর আমি চলেছি সেই অগণন মানুষের কুম্ভ প্রাপ্তির স্থল ত্রিবেণী সঙ্গম
স্থলে।
কথিত আছে প্রয়াগে গঙ্গা,যমুনা তথা অদৃশ্য সরস্বতীর ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করে মানব পাপ মুক্ত হয়ে যান। তথা এই সকল প্রাণী শরীর ত্যাগের পর বৈকুণ্ঠ লোকে নিবাস করেন। অর্থাৎ এই শরীর বা কায়া পাপমুক্ত হয়ে যায়।
যুগ যুগ ধরে ভারতবর্ষের মানুষ এই বিশ্বাসেরই বশীভূত হয়ে চলে এসেছে এখানে একটি পুণ্যের ডুব লাগাবে বলে। শুধু তাই কেনো ! অতীতে এক সময়েতো এখানে এই তীর্থযাত্রীদের মধ্যে অনেকেই প্রাণ ত্যাগ করতেন এই বৈকুণ্ঠ লাভের আশায়। সত্যি কি তাই ! বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহু দুর। এই কাহিনীরও বিন্যাস এখানে পরে করা হবে।
আমি কুম্ভ অঞ্চলের সেক্টর ১৯ এ পৌঁছে যাই প্রায় রাত্রি নয়টার মধ্যে। ভীষণ কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া। এখনই ভীষণ কুয়াশা পড়ছে। ইতিমধ্যেই কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে মেলা অঞ্চলের সর্বত্র। আমাদের বাড়ি থেকে অলোপি বাগ চুঙ্গি অবধি আমার এক পরিচিত অমিত কেশরবানি আমায় তার স্কুটারে ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিল। বাড়ি থেকে ওই দেড় কিমি পথটুকু শুধু হাঁটতে হলো না এই আর কি। তারপরে তো শুধু হাঁটা। সেই সময়েই পৌষ পূর্ণিমার স্নান করে পূণ্য স্নানার্থীদের ভিড় আবার ফিরছে। প্রায় দেড় কোটি পুন্ন্যার্থী স্নানপর্ব সম্পন্ন করে ফেলেছেন। কোনো যান বাহন আর যাবে না বলা হলেও টোটোগুলো কিন্তু যাত্রী বসাচ্ছে। আমি এবং অনেকেই কিন্তু বেশ হাঁটছিলাম। পথে দেখি লোভনীয় লাল আপেলসম পেয়ারা ঠেলায় ঢেলে বিক্রি হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে এলাহাবাদে পেয়ারার ফলন সেই রকম হয়নি। এই বছর যেনো সময়ের একটু আগেই বাজারে পেয়ারা এসে গেছে। গতকাল পাড়ায় একজন পেয়ারা বিক্রেতার কাছে জিজ্ঞাসা করাতে সে জানিয়েছিল, বামরৌলিতে তার বাগানে এই রকম উন্নত লাল পেয়ারা ছোটো অবস্থায় গাছে উপছে উঠেছে।
'বাবুজি খাইয়ে ইসবার লাল অমৃত আমরুদ মন ভরকে। সে বলেছিল,‘সব গঙ্গা মাইয়া কি কৃপা বা।’ বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহু দুর। তাদের এই বিশ্বাস থাকুক না। অবশ্য আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম,কোনো সার ইত্যাদি দিয়ে ছিল কিনা। তাতে ও জানিয়ে ছিল,না নিম, হাড়ের গুড়ো ও গোবর সার ছাড়া তেমন কোনো সার দেয়নি। সত্যিই কৃপাই বলতে পারা যায় আর কি। বাড়িতে প্রায়ই এখন লাল পেয়ারা খাচ্ছি। অসাধারণ স্বাদ। এখানে অবশ্য দেখে কেবল ছবি তুললাম। ১৪০/- টাকা কেজি। স্নান থেকে ফেরত আসা তীর্থযাত্রীরাই বেশি কিনছে। ইতিমধে টোটোওয়ালা কিন্তু একটু দূরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পাশে আল্লাপুরের ভিতর ঢুকে যায়। আমি জানি এই রাস্তাটা। অনেকেই হেই হেই করে ওঠে। আমি তাদের আশ্বস্ত করি যে টোটো ঠিক দারাগঞ্জের দিকেই যাচ্ছে সমান্তরাল গলির ভিতর দিয়ে। টোটোতে প্রায় ছয়-সাত জন বসেছেন। অধিকাংশই রাজস্থানী।
গত পরশু যখন কুম্ভ
অঞ্চলে আসছিলাম। সেই সময়ে একজন মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি উত্তরাখণ্ড রাজ্যের
পিথোড়াগড় থেকে তার ৮২ বছরের মাকে নিয়ে কুম্ভ স্নান করাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। চাকুরী সূত্রে সে জম্মু-কাশ্মীরে সেনা জওয়ান। ঠিক
এই সময়ের জন্যই ছুটি পেয়েছে তাও মাত্র চার পাঁচ দিনের জন্য। সুতরাং মাকে এখনই
সঙ্গমে স্নান করাতে নিয়ে এসেছে। মায়ের
মুখে কি সুন্দর হাসি লেগে আছে। সেদিন জিজ্ঞাস করলাম,মাই
আপনার কষ্ট হচ্ছে না ! তাতে মাই বললেন, ‘গঙ্গা মাইয়া সব কষ্ট দূর করে দেবে। আসলে অলকানন্দার কিনারে
পাহাড়েই তো তাদের জীবন কেটেছে। এই কথাটি তিনি বলতে পারতেন। কিন্তু পাহাড়ের সহজ
সরল জীবনে অভ্যস্ত সেই ৮২ বছরের বৃদ্ধা মাতা কেবল গঙ্গা মাইয়ার প্রতি তাঁর অসীম
বিশ্বাসের কথাই অস্ফুট স্বরে বললেন।
সারল্যে ভরা সেই বৃদ্ধা ও তার সেনা
জওয়ান পুত্রের ছবি অঙ্কিত হয়ে মনে থাকবে ঠিকই কিন্তু ছবিও তুললাম। অটো ঠিক
দারাগঞ্জে এসে পৌঁছল। রাত্রি এখন সাড়ে নয়টা মাত্র। সামনেই পূর্বদিক উন্মুক্ত
গঙ্গা বক্ষ। এই পথ বিখ্যাত গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড ঠিক এইখানে গঙ্গা বক্ষে নিজেকে
জল পথের মাধ্যমে ওই পারে পৌঁছেছে। স্বাভাবিকই সেই সময়ে ব্রিজ বা পোল ছিল না।
সুতরাং ওই পার অর্থাৎ ঝুঁশি থেকেই আবার তার পথ চলা পথিকদের নিয়ে। এবার তার
সমাপ্তি বঙ্গভূমির হাওড়া জেলার বোটানিকাল গার্ডেনের মধ্যে। দারাগঞ্জ সংলগ্ন সমগ্র
অঞ্চল এখন শুধু মানুষের ভিড়ে ভিড়াক্রান্ত। কিন্তু এই ভিড় সচল। সব নেমে যাচ্ছে
সামনে কুম্ভ নগরীতে।
এই
দিক দিয়ে কুম্ভ নগরীর সেক্টর ১৯,সেক্টর ২ পৌঁছনো যায়। দারাগঞ্জ গঙ্গাবক্ষে নামার মুখেই মহাকবি নিরালার আবক্ষ প্রতিমা। হিন্দী
সাহিত্যের বিখ্যাত কবি সূর্যকান্ত ত্রিপাঠী ‘ নিরালা ’ জন্ম বাংলার মাটিতে( ২১.০২.
১৮৭৭- ১৫.১০.১৯৬১ ) । মেদিনীপুরের মহিষদল রাজবাড়ীর পুরোহিতের ছেলে। মাছ মাংস
খেয়ে জাত খুইয়েছে। তাই আড়ালে আবডালে তাঁকে তদানীন্তন ব্রাহ্মণ্যবাদীরা খুব একটা
সম্মানের দৃষ্টিতে দেখতো না। তিনিও কোনো কম জান না। নিজের পেটে দানা নেই। রাস্তার ভিখারিনীর চিকিত্সা
করাতেন। রামকৃষ্ণ কথামৃতের তিনি হিন্দী অনুবাদ করেছেন। বড় অনাদরের মধ্যে তিনি
বিরাজমান। এতো কোটি কোটি টাকার জীর্ণশীর্ণ মন্দির গুলি করিডোর নাম করে চমকে উঠছে,কিন্তু কারোরই ভ্রুক্ষেপ নেই যে নিরালার
আবক্ষ মূর্তির সামনে খোদাই কবিতার অক্ষর শব্দগুলি অন্তত পুনঃ উজ্জ্বল করে তুলি।
“একবার বস ঔর নাচ তু শ্যামা
সামান সভী তৈয়ার
কিতনে হী হ্যায় অসুর, চাহিয়ে তুঝকো
কিতনে হার
কর মেখলা মুন্ড মালাও মে বন-মন অভিরামা।
এক বার বস ঔর নাচ তু শ্যামা ।
....উঙ্গলিকে ফেরো মে দিন গিনতা হী যাঁউ ক্যা মাঁ
এক বার বস ঔর নাচ তু শ্যামা ।”
তাঁর
বিখ্যাত কবিতার এই উদ্ধৃতির মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয় যে কবি নিরালার মন মস্তিষ্কে
দুর্বল নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের প্রতি কতটাই সহানুভূতি ও বেদনা ফুটে উঠেছে। না তিনি বামপন্থী ছিলেন না। বরং বেদান্তবাদী
ছিলেন। আমি তাঁর আবক্ষ প্রতিমার প্রদক্ষিণ করি। ছবি তুলি। কার প্রতি এবং কাদের
প্রতি একরাশ ঘৃণা ছুঁড়ে দিই। রবীন্দ্রনাথ ও স্বামীজির প্রবল অনুরাগী ‘নিরালার ’ কাব্য হিন্দী সাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে।
হ্যাঁ এবার শুধু হাঁটা।
ক্রমশ ………
১৬তম পর্ব পড়ুন আগামী সোমবার
লেখকের অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
লেখক পরিচিতি –
জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গ। প্রাথমিক
শিক্ষার পর বাবার চাকুরীস্থল এলাহাবাদে চলে আসা। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক -এর পর এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যা লয় থেকে বাণিজ্য স্নাতকোত্তর এবং
আইনে স্নাতক (Mcom.
LLB )। লেখালিখি প্রবাসেই।
লেখা প্রকাশিত হয়েছে
বিভিন্ন পত্র - পত্রিকা,
স্যুভেনিয়ার, লিটিল ম্যাগাজিন ইত্যাদিতে। নিখিল ভারত বঙ্গ
সাহিত্য সম্মেলন এলাহাবাদ শাখা থেকে প্রকাশিত বার্ষিক ঐতিহ্যপূর্ণ সাহিত্য পত্রিকা' পদক্ষেপ '-এর বর্তমান সম্পাদক।
লেখকের প্রথম গবেষণা মূলক
গ্রন্থ ‘ রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় ও সেই সময় কাল’ প্রকাশিত হয় কোলকাতা বই মেলায় ২০২২
সালে। লেখকের দ্বিতীয় গ্রন্থ বিশ্ব হিন্দী সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি হরিবংশ রায়
বচ্চনের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘ মধুশালা ’-র বাংলায় আত্তিকরণ ও অনুবাদ। এই বইটি এ যাবৎ
বিশ্ব বাংলা সাহিত্যে প্রথম সম্পূর্ণ অনুবাদ। এই কালজয়ী বাংলা কাব্যগ্রন্থটি
প্রকাশিত হয় ২০২৪ সালে ঐতিহ্যবাহী কোলকাতা প্রেস ক্লাবে। বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন
প্রেস ক্লাব সভাপতি শ্রী স্নেহাশিস সুর-সহ বিশিষ্ট সাহিত্যিকগণ।
গবেষণা মূলক প্রবন্ধে
লেখকের বিশেষ রুচি এবং সেই নিয়েই তিনি বর্তমানে কাজ করে চলেছেন।