Advt

Advt

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী

ধারাবাহিকপ্রতি শনিবার


 

২৪তম পর্ব শুরু

 বক পাখি (Ardeidae)


pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী

গো বক

ভোরের আকাশ ফর্সা হয়ে আলো ছড়িয়ে পড়তে না পড়তেই দলে দলে বক উড়ে চলে যায়উড়ন্ত বকের সারি কোথায় যায় জানিনা কিন্তু ওরা দলে দলে ওড়ে অনন্ত আকাশের বুকে ভেসে চলা বলাকার সেই ছবি ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেনবলাকা অর্থাৎ বকের সারি তারা যখন পাখা মেলে উড়ে তা এতই দৃষ্টিনন্দন যে,কবিরা মোহিত হয়ে কাব্যে-কবিতায় ফুটিয়ে তোলেন সেই ওড়ার বর্ণনা! দিগন্তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার মুহূর্ত থেকেই শুরু হয় বকের ঘরে ফেরা সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত কখনও কখনও একটা ঝাঁকে ২৫-৩০ থেকে ৫০ টারও বেশি বক একসঙ্গে ফিরে চলে বাসা অভিমুখে সকাল-সন্ধ্যে আমার সামনে দিয়ে ওরা যায় আসে একই দিকে,একই ভাবে.তবুও দেখার আকাঙ্ক্ষা আমার পূরণ হয়নাএই আসা-যাওয়ার মধ্যেও অদ্ভুত এক শৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হয় 

 “বকআমাদের গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত পাখিবক বলতে আমরা বুঝি লম্বা গলা,লম্বা ঠ্যাঙ, জলের ধারে মাছের অপেক্ষায় ধ্যান মগ্ন সাদা পাখিকখনও সে আমাদের চোখের সামনেই ঘুরে বেড়ায় পুকুরপাড়ে,মাঠে-ঘাটে,জলাশয়ে এরকম অনেক পাখিকেই আমরা শুধু বক বলেই জানি, তাই তাকে বিশেষ আমল দিই নাকিন্তু বকের বহু রকমের প্রজাতি আছে,তাদের ভিন্ন ভিন্ন নাম, ভিন্ন শরীরের গঠন তবুও সাধারণভাবে তারা সকলেই বক নামেই পরিচিত তবে বক বললেও এরা আমার মতো মোটেও বকবক করে না তথ্যসূত্র বলছে পাখিরা নাকি উড়ন্ত ডাইনোসরের উত্তরসূরি কিন্তু বকের মতো নিরীহ পাখি কমই আছে এই প্রজাতির যত পাখি আছে তাদের সকলেরই খাওয়া-দাওয়া,চাল-চলন এবং ধৈর্য্য ধরে দাঁড়িয়ে থাকার ভঙ্গি প্রায় একই রকম তাই এই জাতীয় যে সব পাখিকেই আমরা বক বলি

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী

 রান্না ঘরের চালে মাথা গলা নিচু করে ছবি তোলাতে ব্যস্ত

বক ধার্মিকএই প্ৰচলিত প্রবাদটা সেই কবে থেকে শুনে আসছি আসলে,জলের ধারে তপস্বীর মতো চুপ করে এরা দাঁড়িয়ে থাকে,আর মাছ অথবা জলজ পোকা পেলেই টপ করে ধরে মুখে পুরেই গিলে ফেলেআবার কখনও কখনও ইচ্ছে করে নিজের গায়ের পালক খসিয়ে জলে ফেলে দেয়সেই পালক হালকা হাওয়ায় অথবা কম স্রোতে ভেসে ভেসে চলতে থাকে পালক নড়াচড়া করলে ছোট ছোট মাছেরা খাবার ভেবে খেতে উঠে আসে উপরের দিকে আর তখনই বক খপ করে ধরে নেয় একটাকে বকের এই কৌশলটা খুবই বুদ্ধিদীপ্তবক প্রজাতির সকল পাখিই এই কৌশল অবলম্বন করে

 বক হলো আর্ডেইডি গোত্রের লম্বা গলা,লম্বা পা-বিশিষ্ট মিষ্টি জলাশয় এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মৎস্যভুক একদল জলচর পাখি তথ্যসূত্র অনুযায়ী পৃথিবীতে ৬৪ প্রজাতির বক রয়েছেএইসব বকের কিছু প্রজাতি আকার ও আকৃতি অনুযায়ী বগলা (Bittern) এবং বগা (Egret) নামে পরিচিত তবে আমার মতো অগা-বগার কাছে কোনটা বগা,কোনটা বগলা আর কোনটা বক সব গুলিয়ে তালগোল হয়ে যায় ইংরেজিতে বিটার্ন(Bittern),ইগ্রেট(Egret)হেরণ নামে(Heron)সব পাখির একটাই বাংলা নাম বক যত্তসব বকবক! বাংলায় সব্বাইকে একটা করে ভালো নাম দেওয়া গেল না!

 সে যাইহোক,আমি এ পর্যন্ত যে কটা বক দেখেছি আর তাদের ছবি তুলেছি,তাদের কথাই বলবো এই পর্বে তবে,ইগ্রেট হলো সাদা ধবধবে,লম্বা গলার একটা বক যে তার গলাটাকে ‘S’ মতো করে গুটিয়ে রাখে আগেই বলে রাখি,এক পর্বে এত বকের কথা একসঙ্গে বলা হয়ে উঠবে কিনা জানি না! তাইকিছু বক কিছু কথাচলুক না হয় কদিন। 

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী

আমার বাগানে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে হেঁটে বেড়ায় এমন করে ।

পাখি পরিচিতি : গো বক

ইংরেজি নাম   : Cattle egret

বৈজ্ঞানিক নাম           Bubulcus ibis.

গবাদিপশুর সঙ্গে বন্ধুত্বের কারণে এদের নামের সঙ্গে ‘গো’ শব্দটি জুড়ে গেছে। এদের দেহের সমস্ত পালক ধবধবে সাদা। একমাত্র প্রজনন সময়ে এদের রং বদলায়। তখন মাথা,ঘাড়,পিঠ,গলার নিচ এবং বুক সোনালি বা বাদামি-কমলা রং ধারণ করে। এদের ঠোঁট খাটো,হলদেটে। ঠোঁটের গোড়া পালকহীন সবুজাভ-হলুদ। পা ও আঙ্গুল ময়লা কালো রঙেরস্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম হলেও পুরুষ পাখি আকারে খানিকটা বড়। এরা যখন চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে,তখন এদেরকে কোলকুঁজো মতো দেখতে  লাগে,এটাই গো-বকদের চিনতে সাহায্য করে।

দেখো কান্ড!!!!

 প্রায়ই ছবি তুলি বিভিন্ন পাখিদের। কিন্তু বেচারা এই বকটা রোজ এসে বসে থাকে আমার রান্নাঘরের আ্যসবেষ্টস এর চালের ইটের গাঁথনীটার উপর। দুমুঠো ভাত ছুঁড়ে দিই চালের মাথায়। রোজই দলবেঁধে বিভিন্ন পাখিরা ভাত খেতে আসেবেচারা/বেচারি বকটা কিন্তু বসেই থাকে। সকলের খাওয়া শেষ হলে যদি পড়ে থাকে তবে দু-এক দানা সে পায়। তাও ওই লম্বা ঠোঁট দিয়ে ভাত তুলে খাওয়া খুব কঠিন এবং পরিশ্রমের ব্যাপার জ ওকে দেখে খুব মায়া হলো! মনে হলো ও যেন চাইছে যে আমি ওর একটা ছবি তুলি। তা ওর মনের কথাটা বুঝতে পেরে সবে ছবিটা তুলতে যাবো,এমন সময় ঠোঁটটা নাড়িয়ে কি যেন বললো মনে হলো! তারপর গলাটা নামিয়ে হাফ-বেন্ট হয়ে গেল।

 ওর ভঙ্গিমা দেখে বুঝতে পারলাম যে,ও বলতে চেয়েছিল,"লম্বা গলা সমেত ছবিটা তুললে গোটা শরীরটা দেখা যাবে না। তাই এমন করে পোজ দিলাম। সবাইকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করবে পোজটা কেমন হয়েছে!

 

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী
গো-বক এবং কোঁচবক একইসঙ্গে শিকারের জন্যে অপেক্ষারত

রু-মোষদের সাথে এদের খুব ভাব গরু বা মোষের শরীরে লেগে থাকা জোঁক,এঁটুলি এদের প্রিয় খাদ্য তাই কখনো গরু-মোষের পিঠে চড়ে আবার কখনো তাদের আশেপাশে এরা ঘুরে বেড়ায়। রাও এতে আরাম পায় বলে এদের বেশ প্রশ্রয় দেয়। এমনকি ধানক্ষেতে লাঙল ও ট্রাক্টর দেওয়ার সময়  এদেরকে ঝাঁক বেঁধে ঘুরতে দেখা যায়। সেইসময় এরা মাটি থেকে বেরিয়ে আসা পোকা মাকড় ব্যাঙ ধরে খায়।

 মোষগুলো যখন নিজেদের শরীর ঠান্ডা রাখার জন্যে কাদা-জলে ডুবে বসে থাকে গো-বকেরা গিয়ে তখন মোষের পিঠের উপর চড়ে বসে আবার কাদা ঘেঁটে উঠে মোষগুলো যখন জলে নেমে সমস্ত শরীরটা ডুবিয়ে দেয় গোবকগুলো তখনও মোষের পিঠের উপর চড়ে বসে থাকে জলের মাছ চোখে পড়লে ধরে খায় তবে,াছের প্রতি গো-বকের আসক্তি অনেক কম। ডাস্টবিনের নোংরা ঘেটে পোকামাকড় খেতেও দেখা যায় এদের। 

 

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী
কালি বক / কোঁচ বক

ছোটবেলায় দুস্টুমি করলে আমার বাবা আগে কাছে ডাকতেন তারপর বলতেন "কান ধরে দরজার দিকে মুখ করে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকো"। এক পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে যেত,হাতটা কান থেকে নেমে আসতো। খানিক পরে ভুল হয়েছে,আর কোনও দিন করবো না ইত্যাদি ইত্যাদি বলে তবে ছাড়া পেতাম।

 বক'গুলোকে কে শাস্তি দেয় জানি না। কিন্তু প্রায় রোজই দেখি কেমন যেন দুঃখু দুঃখু মুখ করে এক পা তুলে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। আর পা'টাকে পেটের ভেতর লুকিয়ে রাখে,মনে হয় এক-পায়ে দাঁড়িয়ে আছে সেটা কেউ যেন দেখতে না পায়। কিন্তু কোথায় লুকোবে! পায়ের নখগুলো পালকের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে যে!

 এমন কত বকের ছবিই রোজ ধরা পড়ে আমার চোখে আমার ক্যামেরায়

পাখি পরিচিতি: বাংলা নাম-কানিবক.

ইংরেজি নাম: Indian Pond Heron / Squacco Heron.

বৈজ্ঞানিক নাম: Ardeola grayii 

এরা জলচর পাখি। যত্রতত্রই এদের দেখা মেলেবাংলায় এদের অনেক নামে ডাকা হয় যেমন দেশি কানিবক, কোঁচবক,কানাবগি ইত্যাদি.... এদের মেছোবকও বলা হয়।

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী

দুপুরবেলা আমার বাড়িতে এসে বিশ্রাম নিচ্ছে কোঁচবকটা

সারাদিন জলের ধারে মাছ খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু সন্ধ্যে হলেই গাছের ডালে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তবে অন্য বকপাখির মতো বড় গাছের মগড়ালে গিয়ে বসে না। একটু নিচু ডালেই বসে। শরীর এতই হালকা যে কচুরিপানার উপর দিয়ে অনায়াসে হেঁটে বেড়ায়।

 অন্য সব বকের মতো এদের স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একইরকম তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা কালচে বাদামি রঙের হয় ঘাড়ে ও কাঁধে হলদে ও সবজে লম্বালম্বি দাগ থাকে দেহের পিছনে, কাঁধের উপরে ওড়ার ডানা হালকা বাদামিথুতনি এবং গলা সাদা বুকের সাদা অংশের উপর লম্বালম্বি বাদামি দাগ দেখা যায়দেহের বাকি অংশ সাদা ঠোঁটের উপরের আগা এবং গোড়া কালচে রঙের কিন্তু নিচের ঠোঁট হলুদ রঙের পা এবং পায়ের পাতা হলদেটে সবুজ হলুদ বৃত্তে কালো চোখ

 প্রজনন ঋতুতে এদের মাথা পীতাভ হলুদ রঙের হয়ে যায় এইসময় ঘাড় ও পিঠে গাঢ় খয়েরি মেশানো বাদামি রঙের পালক ঝালোরের মতো দুপাশে সেজে ওঠে এইসময় এরা সতর্ক বা  কোনও কারণে উত্তেজিত হলে,মাথায় যে দুটো বা তিনটে ফিতের মতো সাদা ঝুঁটি থাকে সেগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে ঠোঁটের গোড়া নীল আর আগা সবজে হলুদ রঙেরপা ও পায়ের পাতা সবুজ হয়ে ওঠে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির বুকে রঙ থাকে িকে বাদামি

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী

বাঁ দিক থেকে বিভিন্ন বয়সের কোঁচবকের ছানা

 এরা মাটিতে বা গাছে বসে থাকলে হঠাৎ করে নজরে পড়ে না ওড়ার সময় ঘাড় কিছুটা গোটানো থাকে তখন লেজের তলা দিয়ে পা-দুটোকে টানটান করে শূন্যে ভেসে পড়লে ডানার সাদা রং নজরে আসেদিনেরবেলা এদিক ওদিক চরে বেড়ালেও সন্ধ্যেবেলা বকেরা দলবেঁধে গাছেই আশ্রয় নেয়একই গাছে অনেক বক সারি দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়এদের ঠোঁটে খুব ধার মানুষ বা অন্য কোনও প্রাণীর কাছে ধরা পড়ে বাধাপ্রাপ্ত হলে এরা চোখের মণিতে ঠোক্কর মারেএরা মাছ,জলের পোকা,চিংড়ি, ব্যাঙ-ব্যাঙাচি,ফড়িং, কেঁচো, সাপের ছানাএছাড়া এরা ঘাসের বীজ খেতে পছন্দ করে

 আমার বাড়ির উঠোন সংলগ্ন বাগানে এবং বাড়ির এদিকে ওদিকে মাঠে জলায় বিভিন্ন ধরনের বক আসেখুব সামনে থেকে বকগুলোকে দেখতে পাই গো-বক,কোঁচ বক,শামুকখোল,একই সঙ্গে চরে বেড়ায় গোবকের দল গাছের মাথায় সার বেঁধে যখন বসে থাকে,দূর থেকে তাদের সাদা পাখনাগুলো শোভা পায় আর গলা নাড়িয়ে নাড়িয়ে কুয়া..কু,কুয়াকু করে সারা সন্ধ্যে ডাকতে থাকে এরা মৎস্যভুক হওয়ার কারণে,যে গাছে ওরা বসবাস করে সেই গাছের নিচে এবং তার চারপাশ ভীষণ রকম আঁশটে-দুর্গন্ধময় হয়ে ওঠে আমার বাগানে গোবক এবং কোঁচবকরা একসঙ্গে ঘুরে বেড়ায় এবং শিকারের আশায় একই সঙ্গে অপেক্ষা করে,যে আগে ধরতে পারে সে খায়তাই নিয়ে নিজেদের মধ্যে লড়ালড়ি করতে দেখিনি

 জানুয়ারি থেকে আগস্ট এদের প্রজননকাল স্ত্রী-পুরুষ দুজনেই বাসার সরঞ্জাম বয়ে নিয়ে আসে এবং মিলেমিশে বাসা বানায় প্রজননকালে অনবরত বট,অশ্বত্থ্,নিম গাছের সরু শুকনো ডাল ভাঙতে দেখা যায় এদের ওই ডাল ভেঙে ঠোঁটে করে বয়ে নিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে ছোট কাঠি,অন্য পাখির ঝরে পড়া পালক,ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো ইত্যাদি বয়ে নিয়ে গিয়ে অগোছালো বাসা বানায় ডিম পাড়ার পর থেকে আর বাচ্চারা উড়তে পারা পর্যন্ত এরা একসঙ্গে থাকে আর দিনরাত সারাক্ষণ ডাকতে থাকেসদ্যজাত বকের ছানাগুলোর চোখ বড়ো বড়ো আর গলা এবং শরীরের বাকি পালকগুলো খাড়া খাড়া হয়ে থাকেগায়ের রঙ বাদামি এবং ডানায় লম্বা লম্বা কালচে বাদামি মোটা দাগ থাকে

pakhi-prakriti-part-24-bak-pakhi-ardeidae-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী

কোঁচ বক

 বকেরা সাধারনতঃ মিশ্র কলোনী করে বাস করে মিশ্র কলোনী বলতে একই গাছে অনেক রকম পাখির সঙ্গে অন্যান্য আরও অনেক বক যেমন গো-বক, কোঁচবক, নিশিবক,পানকৌড়ি বাস করে একটা জিনিষ সব সময় খেয়াল করেছি যে,দুই ভিন্ন গোষ্ঠীর পাখি একই জায়গা ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে পাশাপাশেই ঘেঁষাঘেঁষি হয়ে। কিন্তু কখনোই ওদের একে অপরের সঙ্গে মারপিট করতে দেখিনি। তবে হয়তো অতিরিক্ত দুর্গন্ধের জন্যে কাক-শালিক-ছাতারেরা ওদের সঙ্গে থাকে না বক এসে বসলে এরা তাড়িয়ে ছাড়ে

 এমন আরও অনেকরকমের বক নিয়ে বকবক করতে আসবো পরবর্তী উপপর্বে

          

ক্রমশ ……

২৫তম পর্ব পড়ুন আগামী শনিবার ।

 লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।

বিঃদ্রঃ – ছবি এবং ভি ডি ও লেখিকার নিজের তোলা । 


লেখিকার পরিচিতি –

লেখিকার জীবনের সঙ্গে গল্প অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। যা দেখেন, যা শোনেন, যা শোনেন, যা কিছু স্মৃতির পাতায় জড়িয়ে আছে মনের সাথে,তাই নিয়ে লিখতেই বেশি পছন্দ করেন

লেখা শুরু স্কুল-ম্যাগাজি, কলেজ -ম্যাগাজিন দিয়ে বর্তমানে কিছু লেখা প্রকাশিত হচ্ছে কয়েকটি মাসিক-ত্রৈমাসিক পত্রিকায় বর্তমানে বার্ড’স ফটোগ্রাফী এবং পাখি-প্রকৃতি” নিয়ে লেখা শুরু করেছেন

 

pakhi-prakriti-part-23-banshpati-pakhi-green-bee-eater-bird-jana-ajana-feature-knowledge-by-shrabani-chatterjee-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-e-magazine-পাখি-প্রকৃতি-শ্রাবণী-চ্যাটার্জী