আমরা অনেকেই
ঘরের আনাচে কানাচে বা মাঠে ঘাটে কত ইঁদুর দেখতে পাই। এই ইঁদুর গণেশের বাহন বলে
পুজোও করা হয়। রাজস্থানে একটি মন্দির আছে যেখানে ইঁদুরদের পুজো করা হয় এবং খেতে
দেওয়া হয়। সেখানে কেউ ইঁদুর মারেনা। কিন্তু আমাদের দেশে কেউ ইঁদুরকে গান গাইতে
দেখেছি বলে শুনিনি। যদি বলি ইঁদুরও গান গাইতে পারে, তাহলে সবার কাছে অবিশ্বাস্য
বলেই মনে হবে। কারণ আমরা জানি পাখি গান গাইতে পারে। কিন্তু তাবলে ইঁদুর! তাহলে
ঘটনাটা জানা যাক, জাপানের একদল জীব বিজ্ঞানী জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা
করে এ কথা জানতে পেরেছেন। তাঁরা এমন ইঁদুর আবিষ্কার করেছেন যারা পাখির মত গান
গাইতে পারে। জাপানের এই জীব বিজ্ঞানীর দল বেশকিছু ইঁদুরের দেহে জিনগত পরিবর্তন
ঘটিয়ে রূপান্তরের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এই গবেষণা করতে গিয়ে আকস্মিকভাবেই
আবিষ্কার করে বসেন এই গান গাওয়া ইঁদুর। গবেষণা চলাকালীন একদিন হঠাত তাঁরা লক্ষ্য
করেন, একটি ইঁদুর গান গাইতে পারছে।
বিজ্ঞানীরা
মনে করছেন, এই ইঁদুর থেকেই হয়তো মানুষের অভিব্যক্তি প্রকাশের রহস্যের একটা ঈঙ্গিত
পাওয়া যেতে পারে।
এই গবেষক দলের
প্রধান হলেন অ্যারিকানি উচিমুরা। তিনি বলেছেন -
‘রূপান্তরই বিবর্তনের অন্যতম চালিকাশক্তি। তাই আমরা বেশকিছু ইঁদুরের কয়েক
প্রজন্মের ওপর জিনগত রূপান্তরের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছিলাম। নবজাতক প্রত্যেকটি
ইঁদুরকে আমরা পরিক্ষা করে দেখছিলাম, হঠাৎ এদের মধ্যে একটিকে গান গাইতে শোনা গেল।
এতে আমি বেশ আশ্চর্য হই। কারণ আমি আশা করেছিলাম, তাদের দেহের আকৃতিতে কিছুটা
ভিন্নতা। সেটিও ঘটেছে। যেমন এগুলোর মধ্যে একটি ইঁদুরছানা ছোট ছোট হাত, পা এবং
লম্বা লেজবিশিষ্ট কুকুরের আকৃতি পেয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে পাখির মতো গান গাইতেপারা
ইঁদুরছানাও জন্ম নিয়েছে’।
তোমরা শুনলে
অবাক হবে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ঐ গবেষণাগারে এখন এই অদ্ভুত ধরনের গান
গাইতে পারা ইঁদুরছানা রয়েছে ১০০টিরও বেশী। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এতদিন
ধরে বিভিন্ন দেশে বিজ্ঞানীরা মানুষের কথা বলার রহস্য উন্মোচনের জন্য গান গাওয়া
পাখিদের ওপর গবেষণা চালাচ্ছেন। তাঁরা আরও বলেন, ইঁদুর যেহেতু স্তন্যপায়ী প্রাণী
এবং তাদের সাথে মানুষের মিল অনেক বেশী তাই ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে রহস্য উদঘাটন
অনেক বেশী সহজ হবে।
ইঁদুরের
মস্তিষ্কের গঠন এবং অন্যান্য দৈহিক বৈশিষ্ট্যর সঙ্গে মানুষের অনেক মিল আছে বলে
তাদের কাজ আরও সহজতর হবে। উচিমুরা জানিয়েছেন, খুব অবাস্তব মনে হলেও, তিনি একদিন
সত্যিকারের জীবন্ত মিকি মানুষ বানিয়ে ফেলার স্বপ্নও নাকি দেখছেন। আমরা অপেক্ষা করে
থাকবে বিজ্ঞানীদের গবেষণার সাফল্যের আশায়। কি ভাবছো? জীবন্ত মিকি মাউস দেখতে পেলে
খুব মজা হবে তাই না! এখন আমাদের অপেক্ষা
করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।
সূত্র – দেশ
বিদেশের পত্র-পত্রিকা
লেখক পরিচিতি –
কালীপদ চক্রবর্ত্তী দিল্লি থেকে প্রায় ১৮ বছর ‘মাতৃমন্দির সংবাদ’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন এবং ‘সৃষ্টি সাহিত্য আসর’ পরিচালনা করেছেন। বর্তমানে ‘দ্যুতি সাহিত্য সভা’ পরিচালনা করেন।
দিল্লি, কলকাতা এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখেন। কলকাতার আনন্দমেলা, আনন্দবাজার পত্রিকা, সাপ্তাহিক বর্তমান, নবকল্লোল, শুকতারা, শিলাদিত্য, সুখবর, গৃহশোভা, কিশোর ভারতী, চিরসবুজ লেখা, সন্দেশ, তথ্যকেন্দ্র, স্টেটসম্যান এবং অন্যান্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রকাশিত বই-এর সংখ্যা ৬ টি এবং প্রকাশের পথে ৪টি বই।
‘ভারত বাংলাদেশ সাহিত্য সংহতি সম্মান’, পূর্বোত্তর আকাদেমির পুরস্কার, ‘বরুণা অসি’-র গল্প প্রতিযোগিতায় পুরস্কার লাভ, আরত্রিক সম্মান, তুষকুটি পত্রিকা সম্মান, কাশীরাম দাস সম্মান, সতীনাথ ভাদুড়ী সম্মান লাভ করেন। এছাড়াও আরও কিছু পুরস্কার লাভ করেছেন।
বর্তমানে দিল্লি থেকে প্রকাশিত ‘কলমের সাত রঙ’ পত্রিকার সাথে যুক্ত।